ফের আলোচনার কেন্দ্রে কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। এবং তাঁর মন্তব্যে ফের বিপাকে কংগ্রেস।
জরুরি অবস্থা নিয়ে তারুরের লেখা একটি প্রবন্ধ সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধের বিষয়বস্তু— জরুরি অবস্থা থেকে আমরা কী পাঠ পেয়েছি। সেই প্রবন্ধে ইন্দিরা গান্ধীর আমলের জরুরি অবস্থার সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস সাংসদ। লিখেছেন, ‘১৯৭৫ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভকেই আঘাত করা হয়েছিল’। বিরোধীদের উপরে দমন-পীড়ণ চালানো, বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ‘অপরাধ’ সে সময়ে প্রায়ই ঘটত বলে ওই প্রবন্ধে মন্তব্য করেছেন তারুর। তিনি ব্যাখ্যা করে দেখিয়েছেন যে, ‘ইন্দিরা গান্ধীর স্বৈরাচারী মানসিকতা কী ভাবে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল’।
তারুরের কথায়, “জরুরি অবস্থা আমাদের দেশের চেহারাটা একদম পাল্টে দিয়েছিল। কেউ কোনও কথা বলছিল না, কেউ কোনও প্রশ্ন করছিল না। সাংবাদিক, সমাজকর্মী ও বিরোধী নেতা, সকলেরই ঠিকানা হয়েছিল গারদের ভিতরে।”
জরুরি অবস্থার সময়ে ইন্দিরা গান্ধীর ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন তারুর। তিনি লিখেছেন, ‘এটি ভারতের ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায়। সে সময়ে নির্দেশ ও নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে অনির্বচনীয় অত্যাচার চালানো হত। দিল্লিকে সাজানোর জন্য ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল অসংখ্য বস্তি এলাকা, গৃহহীন হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। গরিব মানুষের উন্নতির জন্য কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি।” জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তিতে নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশ জুড়ে ‘সংবিধান হত্যা’ দিবস পালন করছে। তারুরের এই প্রবন্ধে বিজেপির সেই সুরের ছোঁয়া পাচ্ছেন কংগ্রেসের একাংশ। লোকসভার কংগ্রেসের হুইপ মনিকম টেগোর নাম না করে তারুরকে কটাক্ষ করে বলেন, “যখন একজন সহকর্মী হুবহু বিজেপির মতো কথা বলতে শুরু করেন, তখন ভাবতে হয়, পাখিটা কি তোতাপাখি হয়ে যাচ্ছে?” প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “প্রবন্ধটি আমার এখনও পড়া হয়নি।”
একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কেরলের মানুষ শশী তারুরকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর থেকেও বেশি পছন্দ করেন এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কেরলে যদি কংগ্রেস-জোট জেতে, তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান কেরলের ২৮.৩ শতাংশ মানুষ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)