ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের অবস্থান নিয়ে তোপ দাগলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে শান্তির বার্তা দেওয়া ছাড়া কোনও পদক্ষেপ করেনি ভারত। পাশাপাশি কূটনৈতিক ভাবে ইজ়রায়েলের দিকেই কিছুটা ঝুঁকে রয়েছে তারা। অথচ ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক শুরু প্রাচীন নয়, নানা দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধের আবহেও মোদী সরকারের অবস্থানকে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পাশাপাশি নীতিগত প্রশ্নেও দেশের ঐতিহ্যের বিরোধী বলে দাবি করলেন কংগ্রেস নেত্রী। পাশাপাশি, ইরানের উপরে বিনা ইজ়রায়েলের হানাকে ‘অবৈধ’ ও ইরানের ‘সার্বভৌমত্বে আঘাত’ বলেও উল্লেখ করেছেন সনিয়া।
ইরানের উপরে কার্যত বিনা প্ররোচনায় ইজ়রায়েলের হামলা এবং তার পরে দুই দেশের যুদ্ধ নিয়ে মোদী সরকার নীরব থাকলেও দেশের অন্য একাধিক দলই সরাসরি ইজ়রায়েলের তীব্র নিন্দা করেছে। কংগ্রেস যে সরাসরি ইরানের পক্ষে, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন। পাশাপাশি, গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হানারও তীব্র নিন্দা করেছেন সনিয়া। একটি সংবাদপত্রে লেখা প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, “ইরান আমাদের পুরনো বন্ধু। শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, ইরানের সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক যোগও রয়েছে।” ওই প্রবন্ধে ভারত ও ইরানের বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ মনে করিয়ে সনিয়া লিখেছেন, “অতীতে বহু বার কাশ্মীর প্রশ্নে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে ইরান।” ইজ়রায়েলি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস যে ইরানেরই পাশে, সেটা স্পষ্ট করে জানিয়ে সনিয়া দাবি তুলেছেন, কেন্দ্রের মোদী সরকারেরও উচিত পশ্চিম এশিয়ার শান্তিরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হওয়া।
কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই ইরানের উপরে ইজ়রায়েলের হামলার প্রসঙ্গে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করে তাঁকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে তোপ দেগেছেন সনিয়া। তাঁর বক্তব্য, “ইজ়রায়েল যে ভাবে ইরানে হামলা চালিয়েছে, সেটা ইরানের সার্বভৌমত্বে আঘাত। এটা বেআইনি, একতরফা এবং আঞ্চলিক শান্তি বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা। কংগ্রেস এই হামলার নিন্দা করছে। ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে যখন কথা শুরু হচ্ছিল, তখন এই হামলা কেন?”
গাজ়ায় ইজ়রায়েলের গণহত্যারও প্রসঙ্গও টেনেছেন সনিয়া। গাজ়া নিয়ে ভারত সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন, “গাজ়া এবং ইরানের এই মানবিক সঙ্কটে নয়াদিল্লির নীরবতা আমাদের নৈতিক এবং কূটনৈতিক ঐতিহ্যের পরিপন্থী। এতে শুধুই পশ্চিম এশিয়ায় ভারত তার কণ্ঠস্বর হারাবে তাই নয়, এটা আমাদের নৈতিকতার সঙ্গেও আপস করা।’’ একই সঙ্গে আশার কথা শুনিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী বলছেন, “এখনও দেরি হয়ে যায়নি। নয়াদিল্লির উচিত এখনই পশ্চিম এশিয়া নিয়ে নিজেদের বদল করা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)