তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি দেশ জুড়ে প্রচারে নামছে। তার আগে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্তিতে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে নামল।
তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে নরেন্দ্র মোদী গত বছরের ৯ জুন ফের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন। আগামী ৯ জুন তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি। অন্য দিকে, ২০১৪-র ২৬ মে প্রথম বার মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। সেই হিসেবে সোমবার মোদী সরকারের ১১ বছর পূরণ হয়েছে। মোদী সরকার তথা বিজেপি ৯ জুনকে কেন্দ্র করে প্রচারের পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছে। কংগ্রেস আজকের দিনকে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থার ১১ বছর’ বলে
তকমা দিয়েছে।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, তৃতীয় সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তিতে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রচারের প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য। তার সঙ্গে জাতগণনার ঘোষণা, সংসদে ওয়াকফ বিল পাশ, বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য কর ছাড়, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করানোর জন্য বিলের মতো সিদ্ধান্ত তৃতীয় মোদী সরকারের সাফল্যের তালিকায় রেখে জনসংযোগ কর্মসূচি ঠিক হয়েছে। মন্ত্রী, সাংসদরা সাধারণ মানুষের সামনে কী ভাবে মোদী সরকারের সাফল্য তুলে ধরবে, তার প্রচার কৌশল তৈরি হচ্ছে।
আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মোদী সরকারের ১১ বছরকে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থার ১১ বছর’ বলে তকমা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, পহেলগামের সন্ত্রাসবাদী হামলা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মধ্যেই মোদী সরকার আচমকা, অপ্রত্যাশিত ভাবে জাতগণনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। এনডিএ শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রবিবার এর পুরো কৃতিত্ব নিজের ঝুলিতে পুরেছেন। কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রীই রাহুল গান্ধী জাতগণনার দাবি তোলার পরে একে ‘শহুরে নকশাল’-দের ভাবনা বলেছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর বয়স পঁচাত্তর হলে যিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, সেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একে বিভাজনের চেষ্টা বলেছিলেন।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘২০১৪-র ২৬ মে মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। এই ১১ বছরে বড় বড় প্রতিশ্রুতি, ফাঁপা দাবি করে মোদী সরকার দেশের এমন দুর্দশা করেছে যে অচ্ছে দিন-এর কথা এখন দুঃস্বপ্ন প্রমাণিত হয়েছে। তরুণদের জন্য মোদী সরকার কোটি কোটি চাকরির কথা বললেও বাস্তবে কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়েছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণের কথা তাঁদের উপরে রবার বুলেট চালানো হয়েছে। মহিলাদের সংরক্ষণের
স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদের নিরাপত্তা শিকেয় উঠেছে। দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করে প্রতিনিধিত্ব শেষ করা হয়েছে। অর্থনীতিতে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের বোঝা তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাজারে কেনাকাটা থমকে গিয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি ফ্লপ করেছে। আর্থিক অসাম্য বেড়েছে। বিদেশনীতিতে বিশ্বগুরুর দাবি করে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিগড়েছে। গণতন্ত্রের
প্রতিটি স্তম্ভের উপরে আরএসএস হামলা করেছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)