Advertisement
E-Paper

ছেলের পথ চেয়ে কং‌গ্রেস, বাবার পাশে বিজেপি

ভোট ঘোষণা হয়ে গেল। তবু সমাজবাদী পার্টির জন্য জোটের দরজা খোলা রাখল কংগ্রেস। এমনকী উত্তরপ্রদেশের ভোটে কংগ্রেসের ‘মুখ’ শীলা দীক্ষিত আজ খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে অখিলেশ যাদব আমার চেয়েও ভাল।’’ আর আজই প্রথম বাপ-বেটার লড়াইয়ে মুলায়ম সিংহ যাদবের পাশে দাঁড়াল বিজেপি। সপার কোন্দলকে আরও উস্কে দিতে।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৪

ভোট ঘোষণা হয়ে গেল। তবু সমাজবাদী পার্টির জন্য জোটের দরজা খোলা রাখল কংগ্রেস। এমনকী উত্তরপ্রদেশের ভোটে কংগ্রেসের ‘মুখ’ শীলা দীক্ষিত আজ খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে অখিলেশ যাদব আমার চেয়েও ভাল।’’ আর আজই প্রথম বাপ-বেটার লড়াইয়ে মুলায়ম সিংহ যাদবের পাশে দাঁড়াল বিজেপি। সপার কোন্দলকে আরও উস্কে দিতে।

প্রায় সব শিবিরের নেতারাই মানছেন, ভোটের আগে উত্তরপ্রদেশের খেলাটা অঙ্কের চেয়েও বেশি হয়ে দাঁড়াচ্ছে রসায়নের। মুলায়ম জোটের জল্পনায় আগেই জল ঢেলেছিলেন। তারও আগে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ, দলের রাজ্য সভাপতি রাজ বব্বর জানিয়ে দিয়েছিলেন, জোটের প্রশ্ন অবান্তর। অথচ এখন সেই কংগ্রেসই সপা-কে জোট-বার্তা দিচ্ছে। শীলা আজ জানিয়েছেন, জোট হলে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি ছাড়তেও তিনি রাজি। পরে কংগ্রেসের মুখপাত্ররাও জোটের পক্ষে মুখ খুলেছেন।

অখিলেশকে বহিষ্কারের কথা যে দিন ঘোষণা করেছিলেন মুলায়ম, সে দিনই রাহুল গাঁধী ফোন করেছিলেন নেতাজি-পুত্রকে। টুইট করেও অখিলেশের পাশে দাঁড়ান তিনি। কংগ্রেস নেতৃত্ব যে অখিলেশের সঙ্গে জোট গড়তে রাজি, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে যায় এর পরেই। রাহুল ও অখিলেশ দু’জনেই নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। বিহারের ধাঁচে উত্তরপ্রদেশেও মহাজোটের পক্ষে রাহুল। ব্যক্তিগত ভাবে কংগ্রেস সহ-সভাপতি মনে করেন, অখিলেশ এক জন স্বচ্ছ নেতা। তাই তাঁর সঙ্গে জোট করা যায়। অন্য দিকে অখিলেশ শিবিরও মনে করছে, এই জোট হলে রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোটের ভাগাভাগি অনেকটাই আটকানো যাবে। পাশাপাশি এই বার্তাও দেওয়া যাবে যে, ২০১৯-এর ‘ফাইনালে’ও বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে নামবে দু’দল।

আর বিজেপির এখন প্রধান লক্ষ্য হল, সপা-য় ভাঙন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, বাবা-ছেলের ঝগড়ায় যদি সপা-র সাইকেল প্রতীকটি বাজেয়াপ্ত করে নির্বাচন কমিশন, তা হলে বিজেপিরই সুবিধে হবে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী অবশ্য আজ বলেছেন, প্রতীক বাজেয়াপ্ত করার পর্যায়ে তাঁরা এখনও পৌঁছননি। দু’পক্ষের দাবি পর্যালোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সে সবের অপেক্ষা না করেই আজ মুলায়মের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছে বিজেপি। গোড়া থেকেই অখিলেশ অভিযোগ করে আসছেন, অমর সিংহরা বিজেপির ‘এজেন্ট’। তাই ভোট ভাগাভাগি হলে বিজেপির লাভ। বস্তুত, গত কাল এবিপি নিউজের সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে বাপ-বেটা একসঙ্গে লড়লে সমাজবাদী পার্টি সকলের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। আর তাঁরা আলাদা লড়লে এগিয়ে যাবে বিজেপি। কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও একসঙ্গে লড়লে সপা পেতে পারে ১৪১-১৫১টি আসন। বিজেপির ঝুলিতে যেতে পারে ১২৯-১৩৯টি আসন। কিন্তু আলাদা লড়লে মুলায়মের দল পাবে মাত্র ৯-১৫টি আসন, অখিলেশ ৮২-৯২টি। সে ক্ষেত্রে বিজেপি পেয়ে যাবে ১৫৮-১৬৮টি আসন।

এই পরিস্থিতিতে সপা-র অন্তর্দ্বন্দ্ব উস্কে দিতে বিজেপি আজ মাঠে নামিয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ভূপেন্দ্র যাদবকে। তিনি বলেছেন, ‘‘ছেলে কখনও উইল করতে পারেন না। সেটি বাবাকেই তৈরি করতে হয়। মুলায়ম যখন জাতীয় সভাপতির পদে রয়েছেন, তখন তাঁর অনুমতি ছাড়া দলের অধিবেশন কেউ ডাকতে পারেন না। আর সেই অধিবেশনে সভাপতিকে হঠাতেও পারেন না।’’

পাশাপাশি, মায়াবতীকেও হাতে রাখার চেষ্টা করছে বিজেপি। দলিত নেত্রী যাতে কিছুতেই কংগ্রেস শিবিরে ঘেঁষতে না পারেন, সে জন্য সক্রিয় রয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। মায়ার দূত ও রাজ্যসভার সদস্য সতীশ মিশ্রের সঙ্গে গোপনে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। মায়ার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলা রয়েছে। সেটিকে অস্ত্র করে পরোক্ষে চাপ দেওয়ার প্রক্রিয়াও চালু রয়েছে। নেতাদের একাংশের বক্তব্য, ভোটের পরে এক নম্বরে থেকেও সরকার গড়ার অবস্থায় পৌঁছতে না-ও পারেন মায়াবতী। সে ক্ষেত্রে অতীতের মতো দলিত নেত্রীকে সমর্থন দিয়েই রাজ্যে ক্ষমতার ভাগ নিতে চায় বিজেপি।

BJP Akhilesh Mulayam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy