Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

দেশে সংক্রমণ ৬৫ লক্ষ ছাড়াল, নতুন করে আক্রান্ত ৭৫,৮২৯, সুস্থতা বেড়ে ৮৪.১৩ শতাংশ

এই মুহূর্তে দেশে মোট সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ন’লক্ষ ৭৬ হাজার ২৫।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ১১:৪৭
Share: Save:

দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এ বার ৬৫ লক্ষ ছাপিয়ে গেল। সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে বিশ্ব তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। গত কয়েক দিন ধরে দৈনিক সংক্রমণ খানিকটা নিম্নমুখী হয়েছে বটে, তবে আমেরিকা এবং ব্রাজিলের মতো দেশের তুলনায় তা ঢের বেশি। বর্তমানে ওই দুই দেশে দৈনিক সংক্রমণ যেখানে ৫০ ও ২০ হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করছে, ভারতে সংখ্যাটা ঘোরাফেরা করছে ৭০-৮০ হাজারের কোটায়। তাই উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।

শুক্রবার থেকে দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ নিম্নমুখী। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যানেও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৮২৯ জন। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৭৯ হাজার ৪৭৬। তার আগের তিন দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আশি হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করছিল। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৬৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৭৩ জন মানুষ নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্ব তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় এই সংখ্যাটা ৭৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮৪৬ এবং তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে তা ৪৮ লক্ষ ৮০ হাজার ৫২৩।

এই মুহূর্তে দেশে মোট সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ন’লক্ষ ৭৬ হাজার ২৫। তবে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৫৫ লক্ষ ন’হাজার ৯৬৬ জন করোনা রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তার ফলে দেশে সুস্থতার হার বেড়ে ৮৪.১৩ শতাংশ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৮২ হাজার ২৬০ জন করোনা রোগী। সুস্থতা বৃদ্ধির এই হার বজায় থাকলে, ভারতের পক্ষে পরিস্থিতি অনুকুল হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

প্রতি দিন যত সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে এবং তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ লক্ষ ৪২ হাজার ১৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দৈনিক নতুন সংক্রমণ কম হওয়ায় সংক্রমণের হার কমে ৬.৬৪ শতাংশ হয়েছে, গতকাল যা ৭.০২ শতাংশ ছিল।

গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে করোনার প্রকোপে দেশে দৈনিক মৃত্যু হাজারের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছিল। মাঝে ২৯ সেপ্টেম্বর তা কমে ৭৭৬-এ নেম এসেছিল। এ দিন ফের দৈনিক মৃত্যু হাজারের নীচে নেমে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৯৪০ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত নোভেল করোনার প্রকোপে এক লক্ষ এক হাজার ৭৮২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মৃত্যুর নিরিখে বিশ্ব তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত দু’লক্ষ ন’হাজার ৩৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এক লক্ষ ৪৫ হাজার ৩৮৮ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেরই করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এখনও পর্যন্ত ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৮৬১ জন মানুষ কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন সেখানে। এর মধ্যে ১১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫৫ জন আবার সুস্থও হয়ে উঠেছেন। করোনার প্রকোপে মহারাষ্ট্রে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ হাজার ৭৫৮ জন।

আরও পড়ুন: ‘সুশিক্ষা দিতে হবে মেয়েদের, তবেই রোখা যাবে ধর্ষণ’, মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের​

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাত লক্ষ ১৩ হাজার ১৪। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৪১ জনের। তবে মৃত্যুর নিরিখে অন্ধ্রের চেয়ে এগিয়ে কর্নাটক ও তামিলনাড়ু। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে এখনও পর্যন্ত ন’হাজার ২১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৯ হাজার ৭১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন চতুর্থ স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে। কর্নাটকে ছ’লক্ষ ৩০ হাজার ৫১৬ জন এখনও পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন। তামিলনাড়ুতে এই সংখ্যাটা ছ’লক্ষ ১৪ হাজার ৫০৭।

তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার লক্ষ ১০ হাজার ৬২৬। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৭৭ জনের। ষষ্ঠ স্থানে থাকা দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৩০। সেখানে এখনও পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৪৭২ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত পাঁচ হাজার ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ৬৬ হাজার ৯৭৪। বাংলা তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে।

তালিকায় অষ্টম, নবম এবং দশম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ওড়িশা, কেরল এবং তেলঙ্গানা। ওড়িশা (৮৯২) এবং কেরলে (৮১৩) মৃত্যুসংখ্যা এখনও হাজার পেরোয়নি। তেলঙ্গানায় এখনও পর্যন্ত এক হাজার ১৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ওড়িশায় সবমিলিয়ে সংক্রমিত হয়েছেন দু’লক্ষ ২৯ হাজার ৩৮৭ জন। কেরলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ২১ হাজার ৩৩৩। তেলঙ্গানায় সংখ্যাটা এক লক্ষ ৯৯ হাজার ২৭৬।

প্রথম দশে না থাকলেও, যে যে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা হাজার বা তার বেশি, সেগুলি হল— রাজস্থান (১৫৩০), গুজরাত (৩৪৮৭), মধ্যপ্রদেশ (২৩৯৯), হরিয়ানা (১৪৫০), ছত্তীসগঢ় (১০৩১), পঞ্জাব (৩৫৬২), জম্মু ও কাশ্মীর (১২৩১)।

আরও পড়ুন: হাথরস-কাণ্ডে ধর্ষণের অভিযোগ মুছতে পিআর সংস্থার দ্বারস্থ যোগী​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE