ফাইল চিত্র।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশের ছত্রভঙ্গ পরিস্থিতির কারণ হিসাবে প্রধানমন্ত্রীকেই নিশানা করা হচ্ছে ঘরে বাইরে। এক দিকে দেশবাসী, নেটিজেন এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রবল সমালোচনা করছেন মোদীকে। একই ভাবে বিভিন্ন উন্নত দেশের প্রধান সংবাদপত্র পত্রিকাগুলির শিরোনামে, মোদীর ঘাড়েই চাপানো হচ্ছে এই পরিস্থিতির দায়। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এই ক্ষত মেরামতি করে নিজের ভাবমূর্তি সাফসুতরো করতে আজ দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর এই প্রথম বার মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী। চাইলেন কোভিড মোকাবিলার প্রয়াসে সরকারের সবাইকে শামিল করতে। বিরোধীদের মতে, যাতে ভবিষ্যতে ব্যর্থতার তির যেন একা না মোদীর দিকে বর্ষিত হয়।
আজ সকালে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠক করার পরে মোদীর কথায়, “মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে বৈঠকে আজ কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয়, চিকিৎসা সরঞ্জামের জোগান বাড়ানো, অক্সিজেন সরবরাহ শক্তিশালী করার মতো পদক্ষেপগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সরকারের সমস্ত শাখাকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এবং দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। সমস্ত মন্ত্রীকে তাঁর নিজের এলাকার মানুষের সম্পর্কে আরও বেশি খোঁজ রাখা এবং তাদের মতামত সম্পর্কে অবগত থাকার কথাও আজ বৈঠকে বলেছেন তিনি। স্থানীয় স্তরেই সমস্যা চিহ্নিত করে তাকে আর বেশি বাড়তে না-দিয়ে সমাধান করার দিকে জোর দিতে চাইছেন মোদী। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার গত ১৪ মাসে যে সব পদক্ষেপ করেছে, সেগুলিও আজ খতিয়ে দেখেছে মন্ত্রী পরিষদ। এই বৈঠকে সারা দেশে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা চালু করতে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ রূপায়ণে জোর দেওয়া হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে প্রথম সারির যোদ্ধাদের স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পটিও ৬ মাস বাড়নো হয়েছে।
আজ সকালেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইটে নিশানা করেছেন মোদীকে। তাঁর বক্তব্য, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের চতুর্থ সপ্তাহ কেটে গেল। দু’লাখের বেশি মৃত, কিন্তু জবাবদিহি করার লোক শূন্য। এই হল ‘আত্মনির্ভর’ দেশ। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, আজকের বৈঠকে মোদীর নির্দেশ, আরও বেশি করে মানুষের কাছে সমাধান নিয়ে পৌছনো। তাঁদের বোঝানো যে সরকার নিশ্চেষ্ট নেই। মানুষকে বলা যে, কেন্দ্র বছরের গোড়াতেই রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছিল। সমস্ত দেশেই দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে,কমেও গিয়েছে। এ ক্ষেত্রেও যাবে। সরকার যথা সম্ভব পরিস্থিত স্বাভাবিক করার জন্য যে লড়াই করছে, এই ছবিটা স্পষ্ট করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তাঁর সতীর্থদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজকের আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে টিকাকরণের বিষয়টিও। এখনও পর্যন্ত ১৫ কোটির বেশি মানুষ টিকা পেয়েছেন। প্রতিষেধক উৎপাদন কী ভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়েও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রীরা। গোটা বৈঠকটিই হয়েছে ভিডিয়ো মাধ্যমে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি প্রমুখ। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল কোভিড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে একটি বিস্তারিত বক্তৃতা দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy