Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

কেবল দু’টি প্রতিষেধককেই কেন বাছা হল? মোদীকে প্রশ্ন মমতার

মমতাকে আশ্বাস দিয়ে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল জানান, বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে দু’টি প্রতিষেধক সম্পূর্ণ নিরাপদ।

নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩৩
Share: Save:

মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এখনও চলছে। অভিযোগ, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়নি কোনও বিজ্ঞান-জার্নালেও। চূড়ান্ত ফলাফল আসার আগে এমন কোনও সংস্থার প্রতিষেধক কেন বেছে নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ প্রশ্নও তুললেন, কেন এ ভাবে কেবল মাত্র দু’টি প্রতিষেধককেই বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র?

শনিবার থেকে দেশ জুড়ে গণটিকাকরণ শুরু করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সে জন্য দু’টি প্রতিষেধককে বেছে নিয়েছে কেন্দ্র। একটি অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে ভারতে যা তৈরি করছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। অন্যটি হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। মানবদেহে এখন তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালু রয়েছে কোভ্যাক্সিনের। বিদেশে শেষ হলেও এ দেশে এখনও তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালু রয়েছে কোভিশিল্ডেরও। তা সত্ত্বেও জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের প্রশ্নে ওই দুই প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। আর তা নিয়েই আজ প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, কোনও প্রতিষেধক নিরাপদ ও কার্যকর— এই ছাড়পত্র বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহের পরেই দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে মমতা জানতে চান, “প্রতিষেধক নেওয়ার পরে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে কি না?” প্রশ্ন করেন, “যে কোনও প্রতিষেধক প্রয়োগের আগে নির্দিষ্ট সংখ্যক পরীক্ষা ও ত্রুটিহীন গবেষণা প্রয়োজন। বেছে নেওয়া প্রতিষেধকগুলির ক্ষেত্রে তা আছে তো?”

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মমতার সংশয় দূর করার চেষ্টা করেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল। তিনি তৃণমূল নেত্রীকে আশ্বাস দিয়ে জানান, বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে এ কথা বলা যায় যে দু’টি প্রতিষেধক সম্পূর্ণ নিরাপদ। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। জার্নাল প্রশ্নে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, কোভিশিল্ডের গবেষণা একাধিক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। কোভ্যাক্সিনের প্রাণিদেহে প্রয়োগের বিষয়টিও ছাপা হয়েছে বিভিন্ন জার্নালে। আর মানবদেহে কোভ্যাক্সিন প্রয়োগের প্রশ্নে সংস্থা প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের যে গবেষণা সংক্রান্ত রিপোর্ট ল্যানসেট পত্রিকায় পাঠিয়েছে, তার মধ্যে একটি প্রকাশনায় সে’টি গৃহীত হয়েছে। অন্যটি পর্যালোচনার পর্বে রয়েছে।

আরও পড়ুন: ২০০ টাকায় করোনা টিকা, প্রস্তুতকারী সংস্থাকে বরাত কেন্দ্রের

আরও পড়ুন: তাড়াহুড়ো করবেন না, টিকার জন্য অপেক্ষা করুন, রাজনীতিকদের মোদী

সরকার কেন শুধু দু’টি প্রতিষেধকই কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে, সেই প্রশ্নও তোলেন মমতা। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আরও চারটি প্রতিষেধক ছাড়পত্র পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। টিকাকরণের দ্বিতীয় পর্বে ওই প্রতিষেধকগুলি ব্যবহারের জন্য পাওয়া যাবে।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “ভারতে তৈরি প্রতিষেধক পৃথিবীর অন্য যে কোনও দেশের প্রতিষেধকের চেয়ে সস্তা। এটা আমাদের কাছে গর্বের যে ছাড়পত্র পাওয়া দু’টি প্রতিষেধকই ভারতে তৈরি হচ্ছে। বিদেশি প্রতিষেধক আনতে হলে ভারতকে প্রচুর সমস্যায় পড়তে হতো।” সরকারের যুক্তি, সে কারণেই ভারতের মতো বিশাল দেশে টিকাকরণে ভারতীয় প্রতিষেধক বেছে নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE