Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

‘করোনার আগে মরতে হবে খিদের জ্বালায়’

পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে বাসের ব্যবস্থা করেছে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু অনেকেই সেই বাসে না গিয়ে হেঁটেই বাড়ি পৌঁছতে চান।

দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় জড়ো হওয়া শ্রমিকদের মাস্ক দিচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। রবিবার। পিটিআই

দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় জড়ো হওয়া শ্রমিকদের মাস্ক দিচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। রবিবার। পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০৪:২৭
Share: Save:

নোভেল করোনাভাইরাসের ভয়ে নয়, অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কায় দিল্লির হাজারো পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন।

ত্রাসের দেশে শ্রমিকদের ঘরে ফেরার ‘লং মার্চ’-এ শামিল উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক বছর তিরিশের সাবিত্রীও। লকডাউন তাঁর কাজ কেড়ে নিয়েছে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশে নিজের গ্রামে পায়ে হেঁটে ফিরতে চাইছেন সাবিত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যদি এখানে থাকি, তা হলে কোনও রোগের আগে না খেতে পেয়েই মরে যাব। দাহ করার জন্যও কেউ থাকবে না।’’ দুই সন্তানের মা সাবিত্রী থাকতেন রাজৌরি গার্ডেনের বস্তিতে। কাজ হারানোর পরে করোনার চেয়েও তার বেশি চিন্তা, সন্তানদের মুখে কী ভাবে ভাত জোটাবেন। তিনি বলেন, ‘‘সবাই বলছে ওই ভাইরাসে নাকি সকলে মারা যেতে পারে। অতশত বুঝি না। মা হিসেবে আমার খুব কষ্ট হয় যখন সন্তানদের জন্য খাবার জোগাড় করতে পারি না।’’

পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে বাসের ব্যবস্থা করেছে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ সরকার। কিন্তু অনেকেই সেই বাসে না গিয়ে হেঁটেই বাড়ি পৌঁছতে চান। কারণ তাঁরা এই করোনা আবহে ভিড়ে ঠাসাঠাসি করে যেতে নারাজ। নির্মাণ সংস্থায় ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন বছর পঁচিশের অশোক। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ওই যুবকের কথায়, ‘‘গ্রামে ফেরা ছাড়া কোনও উপায় নেই। কাজ হারানোর পর এখানে খেয়েপরে থাকার মতো টাকা আমার নেই। একা ঘরে পড়ে থেকে মরতে চাই না। যদি গ্রামে ফিরতে পারি তো বেঁচে যাব।’’

সিলমপুর থেকে হেঁটে নিজের গ্রাম বদায়ূঁ যাচ্ছিলেন ঠিকা শ্রমিক নাদিমুল শেখ। কাল ভিড়ের চাপে বাস ধরতে পারেননি। রাত জেগে অপেক্ষা করলেও আজ বাস পাননি। ঠাঁই হয়েছে পূর্ব দিল্লির একটি স্কুলে। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ কি আর সেধে মাইলের পর মাইল হাঁটে? রোজগার বন্ধ। দু’বেলা রুটি কেনার পয়সা নেই। সামনের মাসে কী হবে জানি না। প্রাণ বাঁচাতে হাঁটা লাগিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE