Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

ভাইরাস আরও দু’বছর! নয়া ভ্যাকসিন পরীক্ষার উদ্যোগ

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের দাবি, করোনার ভ্যাকসিন বাজারে এলে তা প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০৪:২২
Share: Save:

আগামী বছর ভ্যাকসিন বাজারে এলেও মারণ ভাইরাসের হাত থেকে নিস্তার মিলছে না। আরও অন্তত দু’বছর নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলে জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন। উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কার মাঝেই করোনার মেয়াদ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় উধাও স্বস্তি।

সৌম্যা জানিয়েছেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকেই ভ্যাকসিন মিলতে পারে বলে আশা। কিন্তু এই বিপুল জনসংখ্যার তুলনায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের হার সীমিত। ফলে প্রাথমিক পর্বে যে সমস্ত মানুষের সংক্রমণ ও প্রাণনাশের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, (করোনা-যোদ্ধা, বয়স্ক) তাঁদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সমস্ত মানুষের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে অন্তত দু’বছর সময় লাগতে পারে। সারা বিশ্বে বর্তমানে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। পৃথিবীব্যাপী মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০% সংক্রমিত হয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা সৌম্যার।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের দাবি, করোনার ভ্যাকসিন বাজারে এলে তা প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০-২৫ কোটি মানুষকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: মোদীর ‘সাহসী’ দাবি, বাস্তব দেখালেন কৌশিক

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমিতের সংখ্যা গত দু’মাসে সর্বনিম্ন (৫৫,৭২২)। অন্য দিকে করোনায় মৃতের সংখ্যাও ১৯ জুলাইয়ের পরে সবচেয়ে কম (৫৭৯) এ দিনই। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৮৮.৩%। অ্যাক্টিভ রোগী আরও কমে ৭,৭২,০৫৫।

ফেব্রুয়ারিতে উপসর্গযুক্ত সংক্রমণের হার তলানিতে ঠেকতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। হর্ষ বর্ধনের সুনির্দিষ্ট দাবি, ফেব্রুয়ারিতে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজারে নেমে আসবে। তাঁর দাবি, বিজ্ঞান ও প্রয়ুক্তি মন্ত্রক সারা বিশ্বের বৈজ্ঞানিকদের এককাট্টা করে পূর্বাভাস জানাতে বলেছিল। গবেষণামূলক পদ্ধতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, আরও ৩-৪ মাস স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ভারতে প্রকোপ কমে আসবে।

আরও পড়ুন: ত্রাতা আদালত, অতিমারির মহাবিপর্যয় থেকে রেহাই কলকাতা ও বাংলার

দেশে এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে, তার মধ্যে কোনও ইনট্রানেজ়াল ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট (স্প্রে করে নাকের মধ্যে দিয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যবস্থা) নেই বলে গতকাল জানিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন। শীঘ্রই সেই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালও শুরু হবে দেশে। হর্ষ জানান, কোডাজেনিক্স সিডিএক্স ০০৫ নামে ইনট্রানেজ়াল ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট তৈরির কাজ শুরু করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। ইতিমধ্যেই পশুদের উপরে এই ইনট্রানেজ়াল ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে। মানবদেহে কোডাজেনিক্সের প্রথম দফার পরীক্ষা এ বছরের শেষে ব্রিটেনে শুরু হওয়ার কথা।

সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুণাওয়ালা সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, চ্যালেঞ্জ হল সমস্ত প্রস্তুতকারী সংস্থাকে এককাট্টা হয়ে ভ্যাকসিন তৈরির শামিল করা। তাঁর মতে, প্রতিটি সংস্থাকে নিজের দেশের জন্য অর্ধেক এবং বাকি বিশ্বের জন্য অর্ধেক ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্য নিতে হবে। টিকার দাম ও তা সাধ্যের মধ্যে রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ।

অন্য দিকে ইনট্রানেজ়াল ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ওয়াশিংটন স্কুল অব মেডিসিন ও সেন্ট লুইস ইউনিভার্সিটির সঙ্গে চুক্তি করেছে ভারত বায়োটেকও। আমেরিকায় প্রথম দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল সন্তোষজনক হলে তার ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিসিজিআই-এর কাছে অনুমোদনের আবেদন জানাবে ভারত বায়োটেক। ছাড়পত্র পেলে তারা পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE