করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছেন সাড়ে ন’লক্ষ রোগী। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনীথ।
বেড়েই চলেছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ছাড়িয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ হাজার ৭০৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ১৫৬।
তবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও গত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৯.০৩ শতাংশ।
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন ও ফ্রান্সকে আগেই টপকে গিয়েছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৬৫৪ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩৩ হাজার ৪২৫ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৩ হাজার ৮৮৩ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৮৫৩ জনের। তিন হাজার ৫৭১ জনের মৃত্যু নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। গুজরাতে দু’হাজার ৩৪৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। কর্নাটক (১,৯৫৩), উত্তরপ্রদেশ (১,৪৫৬), পশ্চিমবঙ্গ (১,৪১১) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,০৯০) মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৮২০), রাজস্থান (৬৩১), তেলঙ্গানা (৪৮০), হরিয়ানা (৩৯৭), জম্মু ও কাশ্মীর (৩২১), পঞ্জাব (৩১৮), বিহার (২৫৩) ও ওড়িশা (১৪৭)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ন’লক্ষ মানুষ। মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৮ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৫ হাজার ১৭৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে মোট নয় লক্ষ ৫২ হাজার ৭৪৩ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে বল্গাহীন ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন তিন লক্ষ ৮৩ হাজার ৭২৩ জন। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ২০ হাজার ৭১৬ জন। জুলাইয়ের শেষ দিকে রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৩১ হাজার ২১৯ জন। গত কয়েক দিনে অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখা ছাড়াল। কর্নাটকে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ এক হাজার ৪৬৫ জন ও অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত এখ লক্ষ দু’হাজার ৩৪৯ জন।
উত্তরপ্রদেশ (৭০,৪৯৩), পশ্চিমবঙ্গে (৬০,৮৩০), গুজরাত (৫৬,৮৭৪) ও তেলঙ্গানাতেও (৫৭,১৪২) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে বিহার, রাজস্থান, অসম, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, কেরল, জম্মু ও কাশ্মীর ও পঞ্জাব। ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও পাঁচ হাজারের আশপাশে।
গত কয়েক দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে রোজ দু’হাজারেরও বেশি জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে দু’হাজার ১১২ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ৬০ হাজার ৮৩০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। এ পর্যন্ত মোট এক হাজার ৪১১ জন রাজ্যবাসীর প্রাণ কেড়েছে করোনা।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy