Advertisement
E-Paper

গুজরাতের ছাত্রভোটেও দাদাগিরি

সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-কে জেতাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ সরাসরি মাঠে নেমে যে ভাবে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার বা বাতিল করিয়েছেন, তাতে চরম ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের বড় অংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১

লোকসভা বা বিধানসভা তো দূর, একটা পুরসভার ভোটও ছিল না। তার পরেও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের খাসতালুক গুজরাতে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ৯টি আসনের ছাত্রভোট নিয়ে গেরুয়া শিবিরের আচরণে স্তম্ভিত সংশ্লিষ্ট সব মহল। সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-কে জেতাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ সরাসরি মাঠে নেমে যে ভাবে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার বা বাতিল করিয়েছেন, তাতে চরম ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের বড় অংশ। পরিস্থিতি এমন যে, অঙ্কের হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও বিশেষ হইচই করছে না এবিভিপি।

লিংডো কমিশনের সুপারিশ মেনে গুজরাত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র কাউন্সিলের নির্বাচন হয়। সেখানে দশটি আসনের মধ্যে একটিতে ভোটই করা সম্ভব হয়নি কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতায়। বাকি ন’টির মধ্যে পাঁচটিতে এবিভিপি-র বিরোধী কোনও দলকে লড়তেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, শেষ পর্যন্ত গোটা নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেসের এনএসইউআই-সহ অন্য ছাত্র সংগঠনগুলি। ফলে বিনা যুদ্ধে পাঁচটি আসনে জেতে এবিভিপি। বাকি চারটি আসনে বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে লড়ার। এবং চারটিতেই এবিভিপি-কে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে তারা।

কী ভাবে আটকানো হয়েছে বিরোধীদের? একাধিক পড়ুয়ার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের শীর্ষ স্তর থেকে নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। তাতেও কাজ না হলে একাধিক ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ফোন করে চাপ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও যে পড়ুয়ারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি, তাঁদের নাম নানা ছুতোয় বাতিল করা হয়েছে। এমনকী ভোটের দিন ঘোষণার পরেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে পিছোনো হয় নাম প্রত্যাহারের দিন! বিরোধী শিবিরের এক ছাত্র হিমাংশু যাদবের অভিযোগ, ‘‘আমি ভোটের মাঝেই নাম প্রত্যাহারে বাধ্য হই! বিরোধী শিবিরের ছাত্রদের ভয় দেখানো হয়েছে। তাতেও যেখানে যেখানে এবিভিপি লড়েছে, হেরেছে। এতেই স্পষ্ট, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্ররা কতটা ক্ষুব্ধ।’’ পড়ুয়াদের বক্তব্য, হারের ভয়েই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে গা-জোয়ারি করে বিরোধীদের মনোনয়ন বাতিল বা খারিজ করিয়েছেন সঙ্ঘ নেতারা।

একটি আসনে এবিভিপি প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী অর্জুন পটেল। এখন অর্জুনকে এবিভিপি-র প্রাক্তন কর্মী বলে দাবি করছে বিজেপি। এই অর্জুনকে ধরেই ৯টি আসনের মধ্যে ৬টি দখলের যুক্তি দিচ্ছে এবিভিপি।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারির মতে, ‘‘তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া হয়, পাঁচ আসনে ভোট করতে দেওয়া হয়নি, তা হলে অন্য চার আসনে কী করে ভোট হল? আর প্রাক্তন এবিভিপিকে যদি ছাত্ররা জেতান, সেটাও বলছে, ভরসা আছে সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠনেই।’’

এমন যুক্তি উড়িয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছাত্র সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা নীলোৎপল বসু বলেন,‘‘মোদী জমানায় কাজ নেই। জাত-ধর্মের জিগির তুলে সব কিছু নষ্ট করা হচ্ছে। ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে।
মহিলাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে। এ সব ছাত্র-যুবরা কখনওই মানেনি, মানছেও না। তারই প্রতিফলন ঘটছে ছাত্রদের ভোটে। দিল্লি, বারাণসীতে হারের পরে গা-জোয়ারি ছাড়া ওদের উপায়ই বা কী!’’

Gujarat Central University ABVP গুজরাত এবিভিপি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy