চালু কথায় বলে, জুতো মেরে গরু দান! দলের প্রবীণতম নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দনের সঙ্গে সেই কাজটাই করল সিপিএম!
ধারাবাহিক ভাবে দলের শৃঙ্খলা ভাঙার দায়ে কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভর্ৎসনা করল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। দলের তরফে বলা হচ্ছে, নবতিপর নেতার জন্য এটাই চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি। এর পরে একই কাজ করলে কড়া শাস্তি ছাড়া গতি নেই। কিন্তু একই সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও বঙ্গ ব্রিগেডের চাপে ভি এস-কে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে কিছুটা সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও কেরল সিপিএম নেতৃত্বকে বিবেচনা করতে বলা হল।
তিরুঅনন্তপুরমে এ বার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সব চেয়ে বেশি উত্তেজনা ছিল কেরলের কয়েক জন নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি ও পাল্টা দাবি নিয়ে। ভি এসের বিরুদ্ধে বারবার দলবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগ ওঠায় কয়েক বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল পলিটব্যুরো কমিশন। যে কমিশনের রিপোর্ট শেষ পর্যন্ত রবিবার বৈঠকের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমা পড়েছে। অন্যান্য অভিযোগ ছাপিয়েও ২০১৫ সালে আলপ্পুঝায় দলের রাজ্য সম্মেলন ছেড়ে কেন বেরিয়ে গিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা, সেই প্রশ্নেই ভি এস-কে গেঁথে ফেলেছে কমিশন। রিপোর্ট পেশ হওয়ার পরে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলার নেতারা অবশ্য ভি এস-কে কড়া শাস্তি না দেওয়ার পক্ষেই জোরালো সওয়াল করেছেন। তাঁদের যুক্তি, প্রবীণ ভি এস-ই কেরলে দলের জনপ্রিয়তম নেতা। এই শেষ বয়সে তাঁর আরও অসম্মান দলের পক্ষে ভয়ানক ক্ষতিকর হবে!
কমিশনের রিপোর্ট বিরুদ্ধে যাবে বুঝেই তিরুঅনন্তপুরমে ভি এস আলাদা করে বৈঠক করেন ইয়েচুরির সঙ্গে। রাজ্য নেতৃত্বের ক্রমাগত অসম্মানজনক আচরণে বিরক্ত হয়ে কোন পরিস্থিতিতে তিনি রাজ্য সম্মেলন ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, তার লিখিত ব্যাখ্যাও সাধারণ সম্পাদকের কাছে দিয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্রের খবর, ইয়েচুরির কাছে ভি এসের অনুযোগ ছিল, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েও দলে তাঁর কোনও সম্মান নেই! কেরলে প্রশাসনিক সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান তাঁকে করা হলেও সেটা দলীয় পদ নয়। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে তিনি বাদ। কেন্দ্রীয় কমিটির
মতো রাজ্য কমিটিতেও তিনি আমন্ত্রিত সদস্য মাত্র! তাঁর এই মনোভাব জানার পরেই ইয়েচুরির হস্তক্ষেপে পিনারাই বিজয়ন, কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনদের বলা হয়েছে কেরলে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে ভি এস-কে অন্তত আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে জায়গা করে দেওয়ার কথা ভাবতে।
স্বজনপোষণ-বিতর্কে জড়িয়ে কেরলে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ই পি জয়রাজনকে। তাঁর বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্স আদালতও চার্জ গঠন করতে বলেছে। কিন্তু বিজয়ন শিবিরের চাপেই আপাতত দল ব্যবস্থা নিতে পারেনি তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্য, ‘‘গোটা বিতর্কের উপরে রিপোর্ট তৈরি হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, ঠিক হবে কেন্দ্রীয় কমিটির পরবর্তী বৈঠকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy