Advertisement
E-Paper

সরাসরি উড়ান, বাণিজ্যের বার্তাও প্রণবের

পর্যটন, বাণিজ্য, সিনেমা। এই সবকটি ক্ষেত্রেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কের গাঁটছড়া বাঁধা হল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সফরে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি ও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দু’দেশের মধ্যে আজ সই হল বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তিপত্র। যার ফলে ভারত থেকে সরাসরি উড়ানে আসা এ বার সম্ভব হবে এই দেশে, এত দিন যে সুযোগ ছিল না।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৬ ০২:২৫
অকল্যান্ডের যুদ্ধ সংগ্রহশালায় প্রণব মুখোপাধ্যায়। রবিবার। ছবি: পি টি আই

অকল্যান্ডের যুদ্ধ সংগ্রহশালায় প্রণব মুখোপাধ্যায়। রবিবার। ছবি: পি টি আই

পর্যটন, বাণিজ্য, সিনেমা। এই সবকটি ক্ষেত্রেই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কের গাঁটছড়া বাঁধা হল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সফরে।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি ও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দু’দেশের মধ্যে আজ সই হল বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তিপত্র। যার ফলে ভারত থেকে সরাসরি উড়ানে আসা এ বার সম্ভব হবে এই দেশে, এত দিন যে সুযোগ ছিল না। দুই, পাঁচ বছর ধরে দু’দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সফরে এই প্রক্রিয়া আরও গতি পাবে বলে মনে করছে এখানকার সরকার। চিনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে নিউজিল্যান্ডের। এই শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে থেকে কোনও না কোনও ভাবে ব্যবসা করছে চিনারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো পোড় খাওয়া দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক নেতার নিউজিল্যান্ডে প্রথম বার আসার পিছনে যে একটি স্পষ্ট বার্তা রয়েছে, সেটা অনুমান করছেন এখানকার রাজনৈতিক মহল। চলতি বছরের শেষে এ দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাচ্ছেন। তার পর নিউজিল্যান্ড সফরে আসতে পারেন মোদী।

বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তি সই হওয়ার সময়ে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘‘এর ফলে দু’দেশের যোগাযোগ আরও সহজ হয়ে গেল। পর্যটন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দু’দেশের মানুষ আরও কাছাকাছি আসতে পারবেন।’’

সাউথ ব্লকে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষে আগেই জানানো হয়েছিল, অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য নিউজিল্যান্ড ক্রমশই ভারতীয় চলচিত্র নির্মাতাদের গন্তব্য হয়ে উঠছে। বলিউড বা তামিল ছবিই নয়, বাংলা সিনেমার শ্যুটিংয়েও যে নিউজিল্যান্ডের চাহিদা বাড়ছে, জানানো হয়েছিল সে কথাও।

কিন্তু সিঙ্গাপুর বা ব্যাঙ্কক হয়েই এত দিন আসতে হতো নিউজিল্যান্ডে। দীর্ঘ যাত্রার কোনও সরাসরি উড়ান ছিল না। আজকের চুক্তির ফলে খুব শীঘ্রই সরাসরি বিমান পরিষেবা শুরু হবে। গত কয়েক বছরে এ দেশে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। এ বার এক ধাক্কায় তা আরও অনেকটা বেড়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, বাড়বে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যও।

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আজ জন কি এবং প্রণব দুজনেই সরব হয়েছেন। জনের কথায়, ‘‘এমন চুক্তিতে ভারত ও নিউজিল্যান্ড দু’দেশেরই লাভ হবে। বাড়বে বিনিয়োগ। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর অপার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

অন্য দিকে, প্রণব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দ্রুত আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে ভারত। তবে রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রের বক্তব্য, এটি এমন একটি বিষয় যাতে দীর্ঘসূত্রতা আবশ্যক। চিনেরও পনেরো বছর সময় লেগেছিল নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এই চুক্তি সই করতে। দেশের বাজারের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ভারসাম্য তৈরি করে তবেই এ ব্যাপারে এগোনো সম্ভব বলে আজ জানানো হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে।

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি বর্তমান সরকারের মেক ইন ইন্ডিয়া, স্কিল ইন্ডিয়া, স্মার্ট সিটির মতো বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্বের সামনে ব্যাখ্যা করেছেন প্রণববাবু। জানিয়েছেন, এই ক্ষেত্রগুলিতে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের উচিত তাকে কাজে লাগানো।

কোনও ভারতীয় রাষ্ট্রপতি এই প্রথম অকল্যান্ডে এলেন। দিনভর রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী বাণিজ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রণববাবু। সন্ধ্যায় অনাবাসী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন। আগামিকাল সকালে নয়াদিল্লির উড়ান ধরার আগে অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন তিনি।

Auckland Pranab Mukherjee boost Indian tourism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy