বলতে হল যত, এড়িয়ে গেলেন তার থেকে বেশি।
রাহুল গাঁধীর ঝাঁঝে কি খেইও হারাতে হল নরেন্দ্র মোদীকে? বিরোধীদের আক্রমণের বদলে এখন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার সুর প্রধানমন্ত্রীর গলায়।
গত চার দিন ধরে বিদেশের মাটিতে লাগাতার প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে এসেছেন রাহুল। আগে বিদেশে গিয়ে এই কাজটি করতেন মোদী। তার পরেই আজ সকালে রেডিয়োতে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বেছে বেছে রাহুলের আক্রমণের কিছু জবাব দিতে হল প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু চাপের মুখে যতটা বললেন, তার থেকেও বেশি এড়িয়ে গেলেন। সঙ্গে বিরোধীদেরও অবাক করে আজ সব দলের সাংসদকে কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, ‘‘বিশ্বাসই হচ্ছে না। এ তো ভূতের মুখে রামনাম। রাহুল গাঁধীর চাপে সত্যিই আতঙ্কে প্রধানমন্ত্রী!’’
রাহুলের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে কী বললেন আর কী-ই বা বললেন না প্রধানমন্ত্রী?
মোদী বললেন, সংসদে দলিত আইন পাশ হয়েছে। তাতে দলিতদের উপর দুষ্কৃতীদের অত্যাচার কমবে। দলিতদের ভরসা বাড়বে। ওবিসি আইন পাশও সামাজিক ন্যায়ের প্রতি পদক্ষেপ। তুললেন ধর্ষণের ঘটনার প্রসঙ্গ। বললেন, দেশ ধর্ষণ বরদাস্ত করবে না। আইন সংশোধন হয়েছে। তাতে কঠোর শাস্তি হবে। ১২ বছরের নীচে কাউকে ধর্ষণ করলে ফাঁসির সাজা। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে সম্প্রতি ধর্ষণের শুনানি দ্রুত হয়ে ফাঁসির সাজা হয়েছে। দেশের স্বার্থে সকলে এগিয়ে এলেই গরিব, পিছিয়ে পড়া শ্রেণি, বঞ্চিতের জীবনে বদল আসবে।
কিন্তু মোদীর ‘মনের কথা’ মন দিয়ে শুনে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাহুলের চাপে প্রধানমন্ত্রীকে কিছু তো বলতে হল। কিন্তু বললেন না আসল বিষয়গুলিই। রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, ধর্ষণে বিজেপি বিধায়ক অভিযুক্ত হওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী নীরব। আজও নীরবই থাকলেন। অমিত শাহও খুনের মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী আজও চুপ থাকলেন। রাফাল দুর্নীতি নিয়ে আজও একটি কথাও বললেন না। আদালত, নির্বাচন কমিশন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠানকে যে ভাবে বিজেপি-আরএসএস কব্জা করছে, চুপ থাকলেন তা নিয়েও। কৃষক, জনজাতি, গরিব, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের স্রোত থেকে বাইরে রাখার অভিযোগেরও কোনও জবাব দিলেন না। আর বেকারি যে সব থেকে বড় সমস্যা, তা-ও মানলেন না। শুধু অরুণ জেটলিকে দিয়ে রাহুলের জবাব দিতে একটি নিবন্ধ লিখিয়েছেন। সেখানেও কোনও সদুত্তর নেই।
কিন্তু এ সবের মধ্যে বিরোধীদের অবাক করে মোদী কৃতজ্ঞতা জানান সব দলের সাংসদকে। বাদল অধিবেশনে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সংসদ চালিয়ে বিভিন্ন বিল পাশ নিয়ে আদর্শ অবস্থান নেওয়ার জন্য। বিরোধীদের আপত্তিতে রাজ্যসভায় তিন তালাক বিল পাশ করানো না-গেলেও মোদীর মুখে আজ ছিল না চেনা কটাক্ষের সুর। এই বিলকে আটকানোর অভিযোগ তুলে রাহুলকে বিদেশেও প্রশ্ন করা হয়। আর জবাবে কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন, বিল আটকানো হচ্ছে না। এটির অপরাধিক দিকটি নিয়ে আপত্তি আছে মাত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy