দূষণ মোকাবিলার জন্য সর্বোচ্চ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি জারি রয়েছে। তা-ও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না দিল্লিতে। সোমবার সকালেও রাজধানী দিল্লির বাতাসের গুণমানের উন্নতি হল না। রাজধানীর বাতাস এখনও ‘ভয়ানক’-ই রয়ে গিয়েছে। সকাল থেকে ধোঁয়াশার পুরু চাদরে ঢাকা দিল্লির মুখ। কোথাও কোথাও দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে এসে ঠেকেছে। প্রভাব পড়েছে বিমান পরিষেবাতেও।
দূষণের জেরে এমনিতেই দিল্লিতে ধোঁয়াশার আস্তরণ রয়েছে। শীতের মরসুমে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। জুড়েছে ঘন কুয়াশার চাদরও। দুইয়ের মিশ্রণে গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সোমবার সকালেও দিল্লিতে বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) ছিল ৪৫০-এর উপরে। জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (সিপিসিবি)-এর হিসাবে, একিউআই ৪০০-র উপরে উঠে গেলেই তা ‘ভয়ানক’।
সোমবার সকাল ৬টায় রাজধানী দিল্লিতে বাতাসের গুণমানের গড় ছিল ৪৫৬। কোথাও কোথাও তা ৫০০-র গণ্ডিও ছুঁয়ে ফেলেছে। ভোরের দিকে অশোক বিহারে একিউআই ছিল ৫০০। ওয়াজ়িরপুর এবং রোহিণীতেও একই অবস্থা। সিপিবিসি-র মাপকাঠিতে একিউআই ৫০০ পর্যন্তই পরিমাপ করা যায়। সেই সর্বোচ্চ সীমাও ছুঁয়ে ফেলেছে এই রাজধানীর এই তিন অঞ্চলের ‘বিষ বাতাস’। অক্ষরধাম চত্বরে ৪৯৩ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল একিউআই। ধোঁয়াশার জেরে রাজধানী দিল্লিতে দৃশ্যমানতা অনেকটা কমে গিয়েছে। কোথাও কোথাও প্রায় শূন্যে নেমে গিয়েছে দৃশ্যমানতা।
কুয়াশার চাদরের বিষয়ে ইতিমধ্যে কমলা সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবনও। দিল্লিবাসীকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে তারা। রাস্তায় বেরোলে, কয়েক পা দূরে কী রয়েছে, তা ঠাওর করতে পারছেন না দিল্লিবাসী। সোমবার সকাল ৭টার হিসাবে, ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চত্বরে দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারে নেমে আসে। তার প্রভাব পড়েছে বিমান পরিষেবাতেও। কুয়াশা এবং ধোঁয়াশার মিশ্রণে ঘন আস্তরণ এবং দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার ফলে বিমান চলাচলে দেরি হচ্ছে। বিমানবন্দর এবং বিভিন্ন উড়ান সংস্থার কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে যাত্রীদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পরিষেবায় দেরি হতে পারে বা বিঘ্ন ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন:
সিপিসিবি-র তথ্য অনুযায়ী, একিউআই যদি ০-৫০ থাকে, তা হলে সেটি ভাল। ৫১-১০০ হলে সন্তোষজনক। ১০১-২০০ হলে মাঝারি। ২০১-৩০০ হলে খারাপ। ৩০১-৪০০ হলে অত্যন্ত খারাপ। ৪০১-৫০০ হলে ভয়ানক। গত কয়েক দিন ধরে ৪০১-র নীচে নামতে দেখা যায়নি দিল্লির গড় একিউআই। শনিবার দিল্লির একিউআই ছিল ৪৩১। রবিবার তা আরও বেড়ে হয়ে যায় ৪৬১। গত কালের তুলনায় সোমবার সামান্য গড় একিউআইয়ের সামান্য উন্নতি হলেও, তা উল্লেখযোগ্য কিছুই নয়।