Advertisement
E-Paper

বহিষ্কৃত বাঙালি অধ্যাপকের করা মামলা শোনার এক্তিয়ার আছে কি? ‘আদালতবান্ধব’ নিয়োগ করল দিল্লি হাই কোর্ট

দিল্লির আন্তর্জাতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কোনও মামলা শোনারই কি এক্তিয়ার নেই ভারতীয় আদালতের? আপাতত এই প্রশ্নেই ঝুলে রইল বহিষ্কৃত বাঙালি অধ্যাপক স্নেহাশিস ভট্টাচার্যের দায়ের করা মামলা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:১৮
বাঙালি অধ্যাপক স্নেহাশিস ভট্টাচার্যকে বহিষ্কার করল দিল্লির সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়।

বাঙালি অধ্যাপক স্নেহাশিস ভট্টাচার্যকে বহিষ্কার করল দিল্লির সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দিল্লির আন্তর্জাতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কোনও মামলা শোনারই কি এক্তিয়ার নেই ভারতীয় আদালতের? আপাতত এই প্রশ্নেই ঝুলে রইল বহিষ্কৃত বাঙালি অধ্যাপক স্নেহাশিস ভট্টাচার্যের দায়ের করা মামলা। উত্তর খুঁজতে এ বার ‘আদালতবান্ধব’ (অ্যামিকাস কিউরি) নিয়োগ করল দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিয়োনাল কোঅপারেশন (সার্ক)-ভুক্ত দেশগুলি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষক। ২০২২ সালে পড়ুয়াদের আন্দোলনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আচরণের সমালোচনা করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন স্নেহাশিস-সহ কয়েক জন অধ্যাপক-শিক্ষক। এর জন্য প্রথমে সাসপেন্ড এবং পরে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বহিষ্কারও করা হয় স্নেহাশিসকে।

সাসপেন্ড হওয়ার পরেই দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাঙালি অধ্যাপক। দিল্লি হাই কোর্টের একক বেঞ্চ সেই সময় জানিয়েছিল, যে হেতু সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, তাই এ বিষয়ে মামলা শোনার এক্তিয়ার নেই তাদের। এর বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্নেহাশিস। গত সপ্তাহে সেই মামলার শুনানি ছিল।

উচ্চ আদালতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, সার্ক চুক্তি মেনে ভারতের সংসদে পাশ হওয়া আইনের আওতায় সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল। এ ব্যাপারে ভারত সরকার পরবর্তী কালে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছিল। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কিছু রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা শোনার এক্তিয়ার নেই কোনও ভারতীয় আদালতের। তবে আইন মেনে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা হতে পারে।

পাল্টা স্নেহাশিসদের যুক্তি ছিল, ভারত সরকার সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়কে কেবল সম্পত্তি বা তহবিল সংক্রান্ত বিষয়ে রক্ষাকবচ দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও রক্ষাকবচ দেওয়া হয়নি। আর যে হেতু ভারতীয় আইনেই সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত, তাই তাদের ভারতীয় সংবিধান মেনেই চলতে হবে। সেই কারণে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২২৬ মেনে হাই কোর্ট এই মামলা শুনতে পারে।

বাঙালি অধ্যাপকের আরও বক্তব্য, অনুচ্ছেদ ২২৬ ভারতীয় সংবিধানের মূল কাঠামোর অঙ্গ। এমনকি ভারতীয় সংসদও পারে না এই নিয়মের বদল ঘটাতে। তা ছাড়া কোনও ভারতীয় আদালতের যদি এক্তিয়ার না থাকে, তা হলে কর্মচারীদের সমস্যার সুরাহা হবে কী ভাবে?

দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর আদালত মত, সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কোনও মামলা শোনার এক্তিয়ার ভারতীয় আদালতের রয়েছে কি না, এই প্রশ্নটি একটি গুরুতর সাংবিধানিক প্রশ্ন। যে হেতু বিষয়টি অনুচ্ছেদ ২২-এর সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই বিষয়টি হালকা ভাবে নেওয়া যায় না বলে মনে করছে আদালত। এর প্রেক্ষিতেই আদালতবান্ধব হিসাবে দুই অভিজ্ঞ আইনজীবীকে নিয়োগ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ নভেম্বর।

South asian university Delhi High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy