Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Nationak Herald

ন্যাশনাল হেরাল্ড-কে দফতর খালি করার নির্দেশ আদালতের

১৯৩৮ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রতিষ্ঠা করেন জওহরলাল নেহরু। তবে কাগজ নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ইউপিএ আমলে।

দিল্লিতে ন্যাশনাল হেরাল্ডের সদর দফতর। ছবি: পিটিআই।

দিল্লিতে ন্যাশনাল হেরাল্ডের সদর দফতর। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:১৬
Share: Save:

দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা এখনও বিচারাধীন। তার মধ্যেই ধাক্কা খেল কংগ্রেস। মধ্য দিল্লির আইটিও এলাকায় তাদের মুখপত্র ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের যে সদর দফতর রয়েছে, তা খালি করার নির্দেশ দিল আদালত। ৫৬ বছরের পুরনো লিজ বাতিল করে গত ৩০ অক্টোবর ওই সংবাদপত্রের প্রকাশনা সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’-কে নোটিস ধরিয়েছিল কেন্দ্র। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিল ওই সংস্থা।শুক্রবার সেই আবেদনেরশুনানিতেই এমন রায় দিলেন বিচারপতি সুনীল গৌড়। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে হেরাল্ড হাউস খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নইলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ন্যাশনাল হেরাল্ডের লিজ বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ভূমি ও উন্নয়ন দফতর। বলা হয়, খবরের কাগজ ছাপানোর জন্য ওই বিল্ডিং দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাগজ ছাপার কাজই বন্ধ রয়েছে সেখানে। ২০০৮ সালে সব কর্মচারীকে স্বেচ্ছাবসর দিয়ে বিদায় করা হয়েছে। তাই খামোখা জায়গা দখল করে রাখা অর্থহীন। ২০১৬ সাল থেকেই উচ্ছেদ উদ্যোগ শুরু হয় বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু তাদের দাবি উড়িয়ে দেয় ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’।বিরোধী কণ্ঠ রোধ করাই সরকারের লক্ষ্য, তাই তাদের হটিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ তোলে তারা।

আদালতে তাদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, ২০০৮ থেকে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সংস্থার আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। যে কারণে প্রকাশনা বন্ধ রাখতে হয়। কিন্তু পরিস্থিতি শুধরে যাওয়ায় নতুন করে কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে হিন্দি, ইংরেজি এবং উর্দুতে কাগজ ছাপা হয়। এ ছাড়া অনলাইন পোর্টালও রয়েছে। তাই সরকারের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। তবে আদালতের রায়শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের পক্ষেই গেল।

আরও পড়ুন: খুন করে স্বামীর দেহের পাশেই রাত কাটালেন, সকাল হতেই অফিস গেলেন স্ত্রী​

আরও পড়ুন: গতকালের রায় খারিজ, রথযাত্রা মামলা সিঙ্গল বেঞ্চেই ফেরত পাঠাল ডিভিশন বেঞ্চ​

১৯৩৮ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রতিষ্ঠা করেন জওহরলাল নেহরু। তবে কাগজ নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ইউপিএ আমলে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। যার মূল হোতা ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। যে ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’-এর হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশিরভাগটাই কংগ্রেসের কাছে। ২০০৮ সালে সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী এবং শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা। যার পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ানের দখলে চলে আসে। ৯০ কোটি টাকা দেনার বোঝাও চাপে তাদের ঘাড়ে।

তার কিছু দিন পর দেনার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলে কারণ দেখিয়ে কংগ্রেসের তরফে ঋণের টাকা মকুব করে দেওয়া হয়। এখানেই আপত্তি সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাদের কোনও কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যক সংস্থাকে ঋণ দেওয়াও তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। তা যদি মেনেও নেওয়া হয়, তাহলে সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণের টাকা মেটাল না কেন কংগ্রেস? ঘুরপথে আয়কর মুক্ত পুরো টাকাটা নিজেদের পকেটে ভরল কেন? লেনদেনের যাবতীয় তথ্য আয়কর বিভাগের হাতে তুলে দিতে হবে বলে কংগ্রেস ও গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে দিল্লি আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। বিষয়টি এই মুহূর্তে বিচারাধীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE