দিল্লি হাই কোর্টে ধাক্কা খেলেন আরজেডি প্রধান তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। জমির বদলে রেলে চাকরির অভিযোগ সংক্রান্ত সিবিআই মামলায় নিম্ন আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লির উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে লালুর আবেদনে সাড়া দিল না দিল্লি হাই কোর্ট।
শনিবার দিল্লি হাই কোর্ট লালুর আবেদন খারিজ করে দিয়ে জানিয়েছে, আর্থিক তছরুপ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই বিশেষ বিচারকের শুনানি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন অভিযুক্ত নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। এই অবস্থায় বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনও যুক্তি দেখছে না আদালত।
সিবিআইয়ের এফআইআর নিয়ে আপত্তি তুলে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন লালু। তাঁর আইনজীবী কপিল সিব্বলের যুক্তি, সিবিআই প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়াই তদন্ত চালিয়ে গিয়েছে। মামলাটিতে শুরু থেকেই কোনও আইনি ভিত্তি ছিল না। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই মামলায় কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। ২০২০ সালে সিবিআই এফআইআর দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয়। মামলাটির ‘ক্লোজ়ার রিপোর্ট’ দাখিল করার পরে এফআইআর দায়ের করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে সিবিআই যুক্তি দেয়, এই বিষয়গুলি নিয়ে বিবেচনা করার উপযুক্ত জায়গাই ট্রায়াল কোর্ট। তার পরেই লালুর আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লি হাই কোর্ট।
২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন লালু। অভিযোগ, সেই সময় চাকরি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। রেলের গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। বিহারের বহু তরুণকে জমি এবং টাকার বিনিময়ে রেলের গ্রুপ ডি পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
আরও পড়ুন:
সিবিআই ইতিমধ্যেই এই মামলায় বেশ কয়েকটি চার্জশিট জমা করেছে। সেই সব চার্জশিটে দাবি করা হয়, কী ভাবে রেলে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জমির দাবি করা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, দুর্নীতির শিকড় কী ভাবে গজিয়েছিল, কী ভাবে তার বিস্তার হয়েছিল— তা-ও চার্জশিটে উল্লেখ করে সিবিআই। আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে ইডি ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি লালুর পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
ইডির মামলায় লালুর বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চালাতেও বাধা নেই। জমির বদলে রেলে চাকরির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদন পেয়েছে ইডি। তবে সেই আবহেই সিবিআই মামলার বিচারপ্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে লালুর আবেদন খারিজ হল দিল্লি হাই কোর্টে।