প্রথমে অপহরণ, তার পর বিক্রি করা হত ২-৫ লক্ষ টাকায়। দিল্লির বুকে শিশুপাচারের বড় চক্রের হদিস পেল পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার একটি তল্লাশি অভিযান চালানো হয় রাজধানী এবং সংলগ্ন এলাকায়। সেই সময়েই এই পাচারচক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দশ জনকে।
শিশুপাচারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে। গত অগস্টে ওই ব্যক্তি দিল্লিতে এসেছিলেন। সরাই কালে খান স্টেশন থেকে তাঁর ছ’মাসের পুত্রসন্তানকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। তার পর সেই শিশুকে আগরার একটি হাসপাতালের মালিকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয় দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করে পুলিশ। সেই সূত্রে ধরে বীরভান নামে এক অপহরণকারীকে চিহ্নিত করে তারা। তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করা হয়। দেখা যায়, সেই মোবাইলের অবস্থান উত্তরপ্রদেশের পিনাহাট দেহাতে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিল্লি পুলিশ। তার পরই বীরভানকে ধরতে অভিযান চালানো হয়। বীরভানকে গ্রেফতারের পর রামবরণ নামে এক ব্যক্তির হদিস পায় পুলিশ। রামবরণের কথাতেই ছ’মাসের শিশুকে গ্রেফতার করেন বীরভান। পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি করছেন তিনি। বীরভান এবং রামবরণ তার পর ওই শিশুকে আগরার হাসপাতালে বিক্রি করেন। সেই সূত্র ধরে হাসপাতালের মালিক কমলেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কমলেশের দাবি, সুন্দর নামে এক ব্যক্তির কাছে শিশুটিকে বিক্রি করেছেন। ৫০ কিলোমিটার ধাওয়া করে উত্তরপ্রদেশ-রাজস্থান সীমানার কাছে সুন্দরকে গ্রেফতার করা হয়। সুন্দরকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে তিনি শিশুটিকে কৃষ্ণ এবং প্রীতি নামে দু’জনের কাছে বিক্রি করেন। ওই দম্পতির কাছ থেকে অবশেষে শিশুটি উদ্ধার হয়।
ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, আগরা থেকে ১০ দিনের এক শিশু এবং এক বছরের আর একটি শিশুকেও পাচার করা হয়েছে। কোথায় পাচার করা হয়েছে, কত শিশুকে পাচার করা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের ওই গ্যাংটি দিল্লিতে যথেষ্ট সক্রিয়। এই গ্যাংয়ে আর কারা রয়েছেন, তাঁদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।