Advertisement
E-Paper

নোট বাতিলের পর ৯১ লাখ নতুন করদাতা: বলছে কেন্দ্র

মোদী সরকারের তিন বছর পূর্তির সময়েই নোট বাতিলের সাফল্য নিয়ে ফের প্রচারে নামলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। দাবি করলেন, ওই সিদ্ধান্তের ফলে করদাতার সংখ্যা ও কর আদায়— দু’ই বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০৩:২৮
সওয়াল: সাংবাদিক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ছবি: পিটিআই।

সওয়াল: সাংবাদিক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ছবি: পিটিআই।

মোদী সরকারের তিন বছর পূর্তির সময়েই নোট বাতিলের সাফল্য নিয়ে ফের প্রচারে নামলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। দাবি করলেন, ওই সিদ্ধান্তের ফলে করদাতার সংখ্যা ও কর আদায়— দু’ই বেড়েছে। আমজনতার ঝোঁক বেড়েছে ডিজিটাল লেনদেনেও। রীতিমতো পরিসংখ্যান তুলে ধরে বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, কী ভাবে এখন করের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে এত দিন তার বাইরে থাকা মানুষকে। যদিও এই সমস্ত দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কালো টাকা রুখতে মঙ্গলবার একটি সরকারি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন জেটলি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রক, রাজস্ব দফতর ও প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের কর্তারাও। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই অর্থমন্ত্রীর দাবি, নোট নাকচের কড়া দাওয়াইয়ের পরে সকলে বুঝেছেন যে, এখন লুকিয়ে নগদে মোটা লেনদেন করে পার পাওয়া বেশ শক্ত। তাই ডিজিটাল লেনদেনের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। বেড়েছে আয়করদাতার সংখ্যা, রাজস্ব সংগ্রহও। বিশেষজ্ঞদের অনেকে অবশ্য এই দাবির সঙ্গে একমত নন। তাঁদের প্রশ্ন, সরকারি পরিসংখ্যানেই তো দেখা গিয়েছে যে, বাজারে নোট ফেরার পরে ফের নগদ লেনদেনের দিকে ঝুঁকছেন সাধারণ মানুষ। তাহলে আর এ নিয়ে এত প্রচারে লাভ কী?

কেন্দ্রের পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, নোট বাতিলের পরে ১৬,৩৯৮ কোটি টাকার লুকোনো আয় ধরা পড়েছে। করফাঁকির সন্দেহে চিহ্নিত করা গিয়েছে অন্তত এক লক্ষ জনকে। শোনা যাচ্ছে, করফাঁকির ঝুঁকি কার ক্ষেত্রে কতখানি, তার বিচার করে আগাম সে বিষয়ে পদক্ষেপ করবে কেন্দ্র। যাঁদের সম্পর্কে জোরালো প্রমাণ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। ঝুঁকি মাঝারি হলে, আয় সম্পর্কে তথ্য তলব করে পাঠানো হবে ই-মেল কিংবা এসএমএস। আর ঝুঁকি কম হলে, চোখেচোখে রাখা হবে তাঁদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কালো টাকা রুখতে কেন্দ্রের এই উদ্যোগ অবশ্যই স্বাগত। কিন্তু নোট বাতি করার ঘোষণার সময়ে কেন্দ্রের ইঙ্গিত ছিল, এর দৌলতে উদ্ধার হবে কয়েক লক্ষ কোটি কালো ও জাল টাকা। সেই বিপুল অঙ্কের হদিস মিলল কোথায়? সরকারি পরিসংখ্যানই তো বলছে যে, লুকোনো আয় ধরা পড়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকারও কম!

কেন্দ্রের দাবি

নোট বাতিলের দৌলতে:—

• ধরা পড়েছে ১৬,৩৯৮ কোটি টাকার লুকোনো আয়

• করফাঁকির জন্য সন্দেহের তীর অন্তত ১ লক্ষ জনের উপর

• নোট নাকচের পরে সন্দেহজনক টাকা জমার জন্য চিহ্নিত হয়েছেন ১৭.৯২ লক্ষ জন

• খোঁজ ১.৫৮ লক্ষ করদাতার ৩.৭১ লক্ষ অ্যাকাউন্টের, যার পুরো তথ্য জমা পড়েনি

• করের আওতায় এসেছেন ৯১ লক্ষ মানুষ

• ব্যক্তিগত আয়কর আদায় বেড়েছে বিপুল পরিমাণে। বেড়েছে করদাতার সংখ্যাও

• নেটে রিটার্ন জমা বেড়েছে ২২%। বাড়ছে ডিজিটাল লেেনদেন

পদক্ষেপ

• নোট বাতিলের পরে জমা করা টাকার সঙ্গে করের সাযুজ্য না- থাকায় চিহ্নিত প্রায় ১৮ লক্ষ জন

• ব্যক্তিগত ভাবে আয়কর অফিসে না-গিয়েও এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ৯.৭২ লক্ষ জন। তথ্য দিয়েছেন ১৩.৩৩ লক্ষ অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া ২.৮৯ লক্ষ কোটি টাকা সম্পর্কে

• জবাব সন্তোষজনক হলে, কোনও ব্যবস্থা নয়

• নতুন ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে আরও ৫.৬৮ লক্ষ লেনদেন

প্রশ্ন যেখানে

• নোট নাকচের সময়ে যে কয়েক লক্ষ কোটি কালো ও জাল টাকা উদ্ধারের দাবি ছিল, তা কোথায়?

• ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে ঢাক পেটানোর পরেও নগদ লেনদেন কমছে কোথায়?

• এই উদ্যোগ কি মোদী সরকারের তিন বছর পূর্তিতে নোট বাতিলের সাফল্য তুলে ধরতেই?

Arun Jaitley demonetisation BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy