সংঘর্ষ শুরুর ৬৪৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগ মণিপুরে রাজনৈতিক আলোচনার দরজা খুলে দিল। পৃথক প্রশাসনের দাবিতে অনড় থাকলেও, অন্তত এত দিনে আলোচনার কথা তুললেন কুকিরা। কুকি বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ ও কুকি যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফের মুখপাত্র গিনঝা ভুয়ালজং জানিয়ে দিলেন, “বীরেনের থাকা না-থাকার সঙ্গে পৃথক প্রশাসনের দাবির নড়চড় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আলোচনা শুরু হতে পারে।
হাওকিপ বলেন, “বীরেনের ইস্তফা ছিল যে-কোনও আলোচনার ক্ষেত্রে আমাদের পূর্বশর্ত। তিনি পদত্যাগ করায় এ বার আলোচনায় বসতে পারি আমরা। কিন্তু আইন প্রণয়নের ক্ষমতা-সহ পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলই আমাদের দাবি থাকবে।” এ দিকে, বীরেনের পদত্যাগের পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও সর্বসম্মতভাবে অন্য কাউকে পরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া গেল না। বিদায়ী বিধানসভার স্পিকার টি সত্যব্রত, মন্ত্রী ওয়াই খেমচাঁদ ও রাজ্য বিজেপি সভাপতি সারদা দেবীর নাম আলোচনায় ছিল। কিন্তু উত্তর-পূর্বের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র দফায় দফায় বৈঠক করেও নাম চূড়ান্ত করতে পারেননি। ফলে হাইকমান্ড ১২ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। ইতিমধ্যেই বিজেপির বিধায়কেরা দিল্লি যাওয়া শুরু করেছেন। গত ২১ মাসে কোনও সরকারি কাজে অংশ না নেওয়া ২ মন্ত্রী-সহ ১০ কুকি বিধায়কও দিল্লি যেতে পারেন বলে খবর।
দলীয় সূত্রে জানানো হয়, বীরেনের বদলে এমন কোনও মুখ বেছে নিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যাঁর গ্রহণযোগ্যতা মেইতেই ও কুকি উভয়পক্ষেই রয়েছে। সেই সঙ্গে নাগাদেরও বেঁধে রাখতে ওয়াকিবহাল শিবিরের মতে, বীরেন-পর্ব যতটা জটিল ছিল, বীরেন-পরবর্তী পর্ব তার চেয়েও বেশি জটিল হতে পারে। কারণ, যত দিন বীরেন গদি আঁকড়ে ছিলেন তত দিন মেইতেই হোক বা কুকি, উভয় পক্ষই সব দোষ তাঁর ঘাড়ে চাপাচ্ছিল। এখন বীরেন সরে যাওয়ায় মণিপুর সমস্যার দায় কার ঘাড়ে চাপানো হবে তা নিয়ে চাপানউতোর চলবে। ফলে নতুন নেতার পথ হবে আরও কঠিন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)