Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Viral

উত্তরাখণ্ডের হড়পা বানে হারিয়ে গিয়েছে সন্তান, পাথরে মুখ গুঁজে কান্না মা কুকুরের

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই দিন ধ্বংসলীলা চলার পর থেকে সামান্য খাবার মুখে তোলেনি কুকুরটি।

প্রতীকী চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৪৮
Share: Save:

ঘটনাস্থলের কাছেই একটি পাথরের উপর বসে অপেক্ষা করছিল কুকুরটি। মাঝে মাঝে কান্নার সুরে ডেকে উঠছিল। উদ্ধারকারী দল প্রথমে বুঝতে পারেনি, বিষয়টি কী। পরে স্থানীয়রা জানালেন, হড়পা বানে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া বিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে ছোট্ট একটি স্থানে নিজের চার সন্তানকে নিয়ে থাকত কুকুরটি। চকিতে জলের তোড়ে সব ভেঙেচুরে পড়ার পর কোনও মতে নিজে বাঁচলেও সন্তানদের ফেলে রেখে আসতে হয়েছে ওই ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই। তাই এই অপেক্ষা, কান্না।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই দিন ধ্বংসলীলা চলার পর থেকে সামান্য খাবার মুখে তোলেনি কুকুরটি। খালি ভগ্নস্তুপের বিভিন্ন অংশ সে শুঁকে বেড়াচ্ছে। খুঁজে বেড়াচ্ছে সন্তানদের। মাঝে মাঝে কেঁদে উঠছে জোরে। ফেব্রুয়ারির ৭-৮ তারিখের পর থেকে ওই একই রুটিন চলছে।

উত্তরাখণ্ডের হড়পা বানে সব মিলিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন প্রায় ২০০ জন। তার মধ্যে ৫০ জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনও নিখোঁজ ১৫০ জন। উদ্ধারকাজ যথেষ্ট গতিতে চললেও অনেকাংশেই এখনও পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। তপোবন-বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প প্রায় ধুয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই নিজের সন্তানদের ফিরে পাওয়ার আশায় দিনরাত এক করে বসে আছে মা কুকুরটি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকাল থেকে নিজের সন্তানদের মুখ দেখার প্রত্যাশায় উদ্ধারকারী দলের থেকে সামান্য দূরত্বে বসে থাকে কুকুরটি। সারাদিনের সূর্য ডোবার পরেও সে বসে থাকছে কাছেই। রাতে ওই ধ্বংসস্তুপের মধ্যে থেকে শুধু শোনা যাচ্ছে কুকুরের কান্না। স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করেও কুকুরটিকে উদ্ধার করে কোথাও নিয়ে যেতে পারেননি, খাওয়াতেও পারেননি।

উদ্ধারকারীরা বুঝতে পারছেন, যেভাবে প্রত্যেকদিন একটু একটু করে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনই ওই ধ্বংসস্তুপের মধ্যে হয়ত কোথাও চাপা পড়ে গিয়েছে কুকুরছানাগুলি। বেঁচে থাকার সম্ভাবনাো খুব কম। কিন্তু ‘মা’ কিছুতেই মানতে চাইছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Viral Uttarakhand
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE