পুরীর জগন্নাথ মন্দির
ফের বিভ্রাট শ্রীক্ষেত্রে জগন্নাথের মন্দিরে। এবং এ যাত্রা সারা দিনে একেবারে টালমাটাল হয়ে গেল জগন্নাথদেবের রুটিন।
সকাল থেকে মন্দিরের দরজা বন্ধ। তাই ঢুকতে পারেননি ভক্তেরা। এখানেই শেষ নয়, খোদ প্রভু জগন্নাথদেবের প্রাত্যহিক আচার-বিধি, ঘুম থেকে উঠে যাবতীয় কাজকর্ম, তাঁর পুজো, ভোগ নিবেদন— সবই থমকে থাকল সারা দিন। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত জয়বিজয় দরজাই খোলা গেল না সেবায়েতদের একাংশের ‘বিদ্রোহে’। দিনভর জগন্নাথদেবের দর্শন করতে যারপরনাই নাজেহাল হলেন অসংখ্য ভক্ত।
মন্দির সূত্রের খবর, বিরোধের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার বিকেলে। মন্দিরের পুরনো নিয়ম অনুযায়ী, তিন জন ভক্ত ঢোকার সময় তাঁদের অহিন্দু সন্দেহে রুখে দাঁড়ায় পুলিশ। ভবানীশঙ্কর মহাপাত্র বলে একজন সেবায়েত এর বিরোধিতা করেন। পুলিশ তাঁকে নিগ্রহ করে বলে তিনি পুরীর সিংহদ্বার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ বাড়াবাড়ি করছে। অন্যায় ভাবে বাঙালি ভক্তদের মন্দিরে ঢুকতে বাধা দিয়েছে।’’ ভবানীশঙ্করবাবুর বিরুদ্ধেও মামলা রুজু হয়েছে। ওই সেবায়েত মন্দিরের শৃঙ্গারী। জয়বিজয় দরজা তাঁর উপস্থিতি ছাড়া খোলা যাবে না। রোজ সকাল ছ’টায় ওই দরজা খোলে। কিন্তু এ দিন সকালে ভবানীশঙ্করবাবু তাঁর দায়িত্ব পালনে অস্বীকার করেন। তাঁকে ‘নিগ্রহকারী’ পুলিশদের শাস্তির দাবিতে অনড় হয়ে থাকেন তিনি। দুপুরে মন্দির প্রশাসনে ওড়িশা সরকারের প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও সমস্যা মেটেনি। সেবায়েতদের একাংশের সমর্থনে বিরোধিতা চালিয়ে যান ভবানীশঙ্কর। শেষে বিকেল পাঁচটায় মন্দির খোলে। তার পরে মঙ্গল-আরতি সেরে জগন্নাথের প্রাত্যহিক নির্ঘণ্ট চালু হয়। মন্দিরের সেবায়েতদের একাংশের মতে, সূর্যাস্তের আগে মন্দির না-খুললে জগন্নাথদেবের পুজো কার্যত বন্ধ করে দিত। ফের পুজোর জন্য প্রায়শ্চিত্তের দরকার পড়ত।
আগামী বছরেই জগন্নাথ মন্দিরে গর্ভগৃহে ঢুকে দর্শনের জন্য টিকিট চালু হওয়ার কথা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নানা ভাবে পান্ডা তথা সেবায়েতদের কর্তৃত্ব খর্ব করা হচ্ছে মন্দিরে। এই নিয়ে প্রশাসন বনাম সেবায়েত দ্বন্দ্বও লেগে আছে। এ বছরে আগেও একবার জগন্নাথদেবকে ভোগ-নিবেদনে বিলম্বের জেরে জটিলতা হয়েছে। মন্দিরের প্রবীণ দয়িতাপতি তথা সরকার নিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রামচন্দ্র দয়িতাপতি বলেন, ‘‘যা হয়েছে অনুচিত কাজ! রাত ন’টায় প্রভু তাঁর জলখাবার খাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy