কাঁটাতারের বেড়ায় ঘেরা মূল ভারতীয় ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন পূর্ব গোবিন্দপুর গ্রামের দুর্গাপুজোয় একাকার এপার ওপার—দুই বাংলার মানুষ। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের দাউদপুর, কাটলা, দানগ্রাম, বাইশপাড়া সহ ৭-৮টি গ্রামের মানুষ দেশভাগের দুঃখ ভুলে এ বারেও সামিল পূর্ব গোবিন্দপুরের দুর্গাপুজোয়। পুজো কমিটির সম্পাদক পার্থ মণ্ডল বলেন, ‘‘দেশ ভাগের আগে থেকে এখানে পুজো হয়ে আসছে। কাঁটাতারের বেড়ার দরজা পেরিয়ে ৩ কিমি দূরে হিলি বাজার থেকে প্রতিমা থেকে পুজোর যাবতীয় সামগ্রী জোগাড় করা হয়েছে।’’ বাসিন্দাদের মিলিত উদ্যোগে দুর্গাবেদিতে কাপড়ের মন্ডপ তৈরি করে শেষ বেলায় এলাকার বাসিন্দাদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। পুজোর দিনগুলিতে রকমারি দোকান, পসরা সাজিয়ে ওপারের বাসিন্দারাও সামিল হন মণ্ডপ চত্বরে।
বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে পূর্ব গোবিন্দপুর স্বাধীনতার আগে বর্দ্ধিষ্ণু গ্রাম বলে পরিচিত ছিল। সে সময় ওই এলাকায় অখণ্ডিত দিনাজপুরের বাইশটি গ্রাম নিয়ে গ্রামসভার পুজো ছিল বর্তমানের পূর্ব গোবিন্দপুরে। সারারাত অনুষ্ঠিত হতো যাত্রাপালা, গান। দেশ ভাগের সময় সীমান্তের বাঁটোয়ারার দাগ ওই গ্রামের ওপর দিয়ে পরে। বহু লোক সে সময় বাংলাদেশ ছেড়ে হিলি অঞ্চলের গ্রামে চলেও আসেন। পূর্ব গোবিন্দপুরের লোকজনের বক্তব্য, ‘‘সীমান্তের কাঁটাতারে যাতায়াতে মানা। শারদীয়া উৎসবের সময় বাইরের পুজো দেখার জন্যও আমাদের সময়সীমা নির্ধারিত। রাত্রি আটটার মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসতে হয়।’’
পার্থবাবুর কথায়, বিএসএফের কাছে লিখিত অনুমতি নিয়ে পুজো হয়। তাই পুজোর দিনগুলিতে বিএসএফের পক্ষ থেকে কাঁটাতারের গেট বিকেল পাঁচটার বদলে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।