Advertisement
E-Paper

অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে ৩৩১ কোটি টাকা! বিয়েতে খরচ এক কোটি, তদন্তে নেমে ইডি হদিস পেল বিরাট বেটিংচক্রের

ইডি সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের ১৯ অগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ১৬ এপ্রিলের মধ্যে অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা জমা করা হয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৩১
অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা! গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা! গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে ৩৩১ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা! এই বিপুল পরিমাণ টাকা এক জন অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে কোথা থেকে এল? টাকার উৎস খুঁজতে গিয়েই বিরাট এক বেটিংচক্রের হদিস পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। দিল্লির এক অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্ট থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকার হদিস মিলতেই স্তম্ভিত হয়ে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।

সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তদন্তকারী এক সূত্র জানিয়েছে, এই বেটিংচক্র এবং বিপুল পরিমাণ টাকার হদিস পাওয়া যায় গুজরাতে এক ছাত্রনেতার বিয়ের সূত্র ধরে। গত বছরের নভেম্বরে ওই ছাত্রনেতার বিয়ে হয় বিপুল সমারোহে। রাজস্থানের উদয়পুরে অনুষ্ঠিত সেই বিয়েতে এক কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়। আর সেই টাকা অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা হয়েছিল। যদিও সেই বিয়ে এবং পাত্র বা পাত্রী কারও সঙ্গেও কোনও কালে অ্যাপবাইক চালকের কোনও সম্পর্ক ছিল না বলে তদন্তকারী সূত্রের খবর। তা হলে এই টাকা এল কোথা থেকে? কেনই বা অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে সেই টাকা? এই তথ্যানুসন্ধান করতে গিয়েই হতচকিত হয়ে যান ইডির আধিকারিকেরা।

ইডি সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের ১৯ অগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ১৬ এপ্রিলের মধ্যে অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা জমা করা হয়। সংসার চালানোর জন্য যতটা টাকার প্রয়োজন, সেই টাকা উপার্জনকারী এক অ্যাপবাইক চালক এই বিপুল টাকার মালিক কী ভাবে হলেন, তা নিয়েই সন্দেহ দানা বেঁধেছিল। সেই অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে অ্যাপবাইক চালকের ঠিকানায় গিয়ে হাজির হন তদন্তকারীরা। তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইডি সূত্রের খবর, ওই অ্যাপবাইক চালক দাবি করেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে যে ৩০০ কোটি টাকা রয়েছে, তা তিনি জানেনই না। আর এখান থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহ, কোনও দুর্নীতির টাকা সরানোর জন্য অ্যাপবাইক চালকের অ্যাকাউন্টকে ‘মিউল’ অ্যাকাউন্ট হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই চালকের কেওইয়াইসি হাতিয়ে তাঁর নামেই টাকা জমা করেছেন তৃতীয় কোনও ব্যক্তি।

তদন্তকারীরা দেখেন যে, ওই অ্যাকাউন্টে অজ্ঞাতপরিচয় সূত্র থেকে অনেক বার টাকা লেনদেন হয়েছে। তেমনই একটি সূত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। আর সেই সূত্রের হদিস পেতেই বেটিংচক্রের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, গুজরাতের ওই ছাত্রনেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষস্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা এখন প্রায়শই ঘটছে। অনেক মানুষই তাঁদের অ্যাকাউন্ট নম্বর, ব্যাঙ্কের তথ্য, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, এমনকি নেটব্যাঙ্কিংয়ের তথ্য জেনেবুঝে বা অজ্ঞাতে শেয়ার করছেন। আর যে কারণে এই ধরনের ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টকে ‘মিউল অ্যাকাউন্ট’ হিসাবে ব্যবহার করে দুর্নীতি বা কালোটাকা পাচার করা হচ্ছে।

মিউল অ্যাকাউন্ট কী?

মিউল অ্যাকাউন্ট হল এমন একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যা অপরাধীরা অবৈধ অর্থ লেনদেনে (যেমন: আর্থিক তছরুপ, প্রতারণা, চুরি করা টাকা স্থানান্তর) ব্যবহার করে। এই ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি সচেতনভাবে বা অজান্তেই অন্যের অপরাধমূলক অর্থ নিজের অ্যাকাউন্টে গ্রহণ করেন এবং পরে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন। সহজ কথায়, এটি হল অবৈধ অর্থ লেনদেনে ব্যবহৃত মধ্যবর্তী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।

যখন পুলিশ বা তদন্তকারী সংস্থা সেই অ্যাকাউন্টে হানা দেয়, দেখা যায়, প্রতারকেরা পলাতক। যাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লেনদেন হয়েছে, তিনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জানেনই না। তাই সেই সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে গ্রেফতার করেও কিছুই হয় না। তদন্তকারীদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, খুব কম আয় করা কারও অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা ঢুকেছে। সেটি সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের জানা নেই।

betting Delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy