Advertisement
E-Paper

ছিলেন প্রদীপ সাক্সেনা, গ্রেফতারি এড়াতে ধর্ম, নাম, চেহারা বদলে হয়েছেন আব্দুল! ৩৬ বছর পর ধৃত খুনে সাজাপ্রাপ্ত সেই আসামি

পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৮৭ সালে দাদাকে খুনের অভিযোগ ওঠে প্রদীপ ওরফে আব্দুলের বিরুদ্ধে। ১৯৮৯ সালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। প্রদীপের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। জেলবন্দি প্রদীপ প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০৭
ধৃত সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ সাক্সেনা (বাঁ দিকে) ওরফে আব্দুল রহিম। ছবি: সংগৃহীত।

ধৃত সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ সাক্সেনা (বাঁ দিকে) ওরফে আব্দুল রহিম। ছবি: সংগৃহীত।

ছিলেন প্রদীপ সাক্সেনা। কিন্তু গ্রেফতারি এড়াতে ধর্ম, পরিচয়, নাম এমনকি ঠিকানা বদলে ফেলেন। আব্দুল রহিম পরিচয়ে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে দিব্যি দিনযাপন করছিলেন। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, পুলিশে ছুঁলে আঠারো ঘা! এত কিছু করেও শেষরক্ষা হল না। খুনে সাজাপ্রাপ্ত সেই আসামিকে ৩৬ বছর পর গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। প্রদীপ ওরফে আব্দুলকে বরেলীর ১০০ কিলোমিটার দূরে মোরাদাবাদ থেকে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৮৭ সালে দাদাকে খুনের অভিযোগ ওঠে প্রদীপ ওরফে আব্দুলের বিরুদ্ধে। ১৯৮৯ সালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। প্রদীপের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। জেলবন্দি প্রদীপ প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিলেন। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগান তিনি। জেলে না ফিরে পুলিশের নজর এড়িয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তার পর থেকে প্রদীপের খোঁজ চলছিল। কিন্তু কিছুতেই তাঁর নাগাল পাচ্ছিল না বরেলী পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বরেলী থেকে পালিয়ে গিয়ে মোরাদাবাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রদীপ। শুধু আশ্রয় নেওয়াই নয়, সেখানে গিয়ে প্রথমে ধর্ম পরিবর্তন করে প্রদীপ হন আব্দুল। নিজের চেহারাও বদলে ফেলেন। দাড়ি-গোঁফ ছাঁটা প্রদীপ বড় বড় দাড়ি রাখা শুরু করেন। একেবারে নিজেকে বদলে ফেলেন যাতে সহজে কেউ ধরতে না পারে।

সম্প্রতি সেই মামলাটি আবার এলাহাবাদ হাইকোর্টে ওঠে। আদালত তখন পুলিশকে নির্দেশ দেয় চার সপ্তাহের মধ্যে প্রদীপকে হাজির করাতে হবে। আর এই নির্দেশ পেয়ে পুলিশও আতান্তরে পড়ে। ৩৬ বছর আগের মামলা এবং পলাতক আসামিকে কী ভাবে খুঁজে বার করা হবে, তা নিয়ে শুরু হয় নানা পরিকল্পনা। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘ধুলো জমে যাওয়া’ সেই মামলার ফাইল ঘাঁটা শুরু হয়। অপরাধীকে ধরার জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথমে প্রদীপের ভাই সুরেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি এখনও বরেলীতেই থাকেন। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারেন বছরখানেক আগে প্রদীপ বরেলীতে এসেছিলেন কিছু কাজের জন্য। তাঁর চেহারা, নাম এবং ধর্ম— সব বদলে ফেলেছেন, এমনটাই জানতে পারেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কোথায় রয়েছেন প্রদীপ সেই সূত্র কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রদীপের ভাইয়ের উপর নজরদারি শুরু করে পুলিশ। তবে বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে ৩৬ বছর আগেই পালিয়ে গিয়েছিলেন প্রদীপ। আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় পুলিশের সহযোগিতা নেয় বরেলী পুলিশ। সেই সূত্র ধরে পুলিশ খবর পায় প্রদীপ রয়েছেন মোরাদাবাদে। তবে তিনি এখন আর আগের সেই প্রদীপ নন, ধর্ম এবং পরিচয় বদলে নতুন নাম হয়েছে আব্দুল রহিম। মোরাদাবাদের পুলিশের সহযোগিতায় প্রদীপ ওরফে আব্দুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রথমে কিছুতেই স্বীকার করছিলেন না যে, তিনিই প্রদীপ সাক্সেনা। কিন্তু লাগাতার জেরার মুখে পড়ে শেষে আব্দুল স্বীকার করেন তিনিই প্রদীপ। মোরাদাবাদে এক মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করে সংসার পেতেছিলেন প্রদীপ ওরফে আব্দুল। গাড়িচালকের কাজ করতেন তিনি।

Bareilly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy