খসড়া ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি ও আবেদন জানানোর শেষ লগ্নে উত্তেজনা বাড়ছে বিহারে। সম্প্রসারিত না-হলে আজ, সোমবারই শেষ হচ্ছে ওই আপত্তি বা আবেদন জানানোর সময়। তার আগে নির্বাচন কমিশনের তরফে ফের ব্যাখ্যা দেওয়া হল, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) হচ্ছে নির্দিষ্ট আইন ও পদ্ধতি মেনে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ছাড়া শুধু কারও আপত্তির প্রেক্ষিতে কোনও ভোটারের নাম বাদ চলে যাওয়ার জল্পনা বা আশঙ্কার কারণ নেই। এরই মধ্যে কংগ্রেস আবার দাবি করেছে, তাদের দলের বুথ লেভল এজেন্টদের (বিএলএ) খারিজ করা ৮৯ লক্ষ আপত্তি গ্রহণই করেনি কমিশন! তাই গোটা এসআইআর নতুন করে করার দাবি তুলেছে তারা। কমিশন অবশ্য এই অভিযোগকেও ভিত্তিহীন বলছে।
বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) বিনোদ সিংহ গুঞ্জিয়াল নিয়ম ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন, মৃত, স্থানান্তরিত বা একাধিক জায়গায় নথিভুক্ত ভোটারের নাম নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে বাদ যাবে। কোথাও একই ব্যক্তির নাম খসড়া ভোটার তালিকায় দু’বার থেকে গেলেও চূড়ান্ত তালিকায় তা সংশোধিত হবে। বুথ লেভল অফিসার (বিএলও) এবং বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচনী আধিকারিকেরা (ইআরও) সংশ্লিষ্ট আবেদনের শুনানি-সহ নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া না-চালিয়ে কোনও নামই বাদ দিতে পারবেন না। কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, রবিবার পর্যন্ত খসড়া তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আবেদন জমা পড়েছে দু’লক্ষ ৭ হাজার ৫৬৫টি। নাম তোলার আবেদন ৩৩ হাজার ৩২৬। এমনকি, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের মতো দল যে ১০৮টি আবেদন জমা দিয়েছে, তার মধ্যে ১০৩টিই নাম বাদ দেওয়ার জন্য।
কমিশন সূত্রের ব্যাখ্যা, এক এক জনের নাম বাদ দেওয়ার জন্য অন্যেরা আবেদন করছেন, বিষয়টি এমন নয়। বিহারে এসআইআর-এর প্রথম পর্বে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম পূরণ করার সময় ছিল এক মাস। তখন অনেকেই নথি দিতে পারেননি। খসড়া তালিকায় বহুসংখ্যক মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার পরেও মৃতদের পরিবার বা অন্যত্র চলে যাওয়া ব্যক্তিদের (এই সংখ্যাই বেশি) তরফে নাম বাদ যাওয়ার আবেদন এসেছে। তবে নথি ছাড়া কারও আবেদনই গ্রাহ্য হবে না। সে ক্ষেত্রে কোনও এক দলের সমর্থক অন্য দলের সমর্থকদের নাম কেটে দেওয়ার আবেদন করলেই সেটা মেনে নেওয়া হবে, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। কমিশনের দাবি, এসআইআর-এর প্রথম পর্বে ‘অন্যায়’ ভাবে নাম বাদ যাওয়ার অভিযোগ যে কম, নাম ঢোকানোর আবেদনের সংখ্যা থেকেই তা বোঝা যাচ্ছে। বরং, খসড়া তালিকায় উঠলেও সেখান থেকে নাম বাদ যাওয়ার আবেদন অনেক বেশি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)