সব কিছুই ঠিক আছে। সক্ষম তাতের সামনে এমনই ভান করেছিলেন তাঁর বাড়ির লোকেরা। কিন্তু তার আড়ালে যে সক্ষমকে খুনের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল, সেটা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের তরুণী আঁচল মমিদ্বার। তাঁর প্রেমিক সক্ষমকে খুনের অভিযোগ উঠেছে বাবা, দাদা এবং ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ভিন্জাতের হওয়ায় সক্ষমকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
সেই তরুণী এক সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘‘তিন বছর ধরে আমাদের সম্পর্ক। সক্ষমের সঙ্গে প্রায়ই কথা হত আমার পরিবারের। সক্ষমের সঙ্গে বাড়ির সকলেই হেসে কথা বলত। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করেছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই সমস্ত ঘটনাই ছিল সাজানো।’’ আঁচল আরও বলেন, ‘‘আমার বাড়ির লোকেরা সক্ষমের সঙ্গে এমন আচরণ করত, যেন দেখে মনে হবে, আমাদের দু’জনের সম্পর্ক বাড়ির লোকেরা মেনে নিয়েছে। কিন্তু তলে তলে যে চক্রান্ত চলছিল, তা বুঝে উঠতে পারিনি।’’
তরুণীর আরও দাবি, তাঁর বাবা এক সময়ে সক্ষমকে বলেছিলেন তিনি যদি বিয়ে করতে চান, তা হলে কয়েকটি শর্ত মানতে হবে। আঁচলের কথায়, ‘‘সক্ষম সব শর্ত মানতে রাজি হয়েছিল। শুধু চেয়েছিল যাতে আমাদের দু’জনের সম্পর্ক মান্যতা দেয় পরিবার। কিন্তু ওরা তা হতে দিল না। আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বাবা-দাদারা।’’ এর পরই তরুণী বাবা, দাদা এবং ভাইয়ের ফাঁসির দাবি তুলেছেন।
ইতিমধ্যে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তরুণী বাবা গজানন বালাজি মমিদ্বার অম্বেডকর জয়ন্তী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে নাচানাচি করছেন। সেখানে তাঁর কন্যা আঁচলের প্রেমিক সক্ষমকেও দেখা গিয়েছে। আঁচলও ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন। তাঁকে এবং তাঁর প্রেমিক দু’জনকেই বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছিল যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিয়োটি ১৪ এপ্রিলের।
গত বৃহস্পতিবার সক্ষমকে গুলি করে মাথা থেঁতলে খুন করার অভিযোগ ওঠে আঁচলের পরিবারের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় আঁচলের এক নাবালক ভাইও জড়িত। সক্ষমের মৃত্যুর পর তাঁর হাতে সিঁদুর পরে সকলকে স্তম্ভিত করে দিয়েছেন আঁচল। শুধু তা-ই নয়, সক্ষমের দেহ ছুঁয়ে তিনি দাবি করেছেন, এর শেষ দেখে তিনি তবেই ক্ষান্ত হবেন। নিজের পরিবারকে ত্যাজ্য করে সক্ষমের পরিবারের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আঁচল।
আঁচলের কথায়, ‘‘যে দিন সক্ষম খুন হন, সে দিন সকাল ১১টা নাগাদ আমার ভাই আমাকে থানায় নিয়ে যায়। ও বলে, সক্ষমের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করতে। আমি অস্বীকার করি। তার পরেই ওই পুলিশকর্মী বলেন, তোমরা তো প্রায়ই খুন করে এখানে আসো। যে ছেলের সঙ্গে তোমার বোনের সম্পর্ক রয়েছে, তাকেই খুন করে দাও না!’’ আঁচলের অভিযোগ, পুলিশের এই কথায় প্ররোচিত হন তাঁর ভাই। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের কথায় আমার ভাই বলেছিল, সন্ধ্যার মধ্যেই খুন করছি। তার পর আবার আসছি।’’