প্রতীকী ছবি।
ছুটির দুপুর বদলে গেল বিভীষিকায়। বৃদ্ধ বাবাকে ছুরি দিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করলেন মার্চেন্ট নেভির এক প্রাক্তন নাবিক। শুধু তা-ই নয়, স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে মাকেও ওই একই ছুরি দিয়ে আক্রমণ করেন তিনি। এর পর গ্যাস সিলিন্ডার ফাটিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
রবিবার পূর্ব দিল্লির মধু বিহারের অজন্তা অ্যাপার্টমেন্টের ঘটনা। সিলিন্ডার ফেটে গুরুতর জখম হয়েছেন ১১ জন পুলিশকর্মী-সহ ওই অ্যাপার্টমেন্টের ১৩ জন। অভিযুক্ত মধ্য তিরিশের রাহুল মাটাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন
পাম্পে কার্ডে লেনদেনে ফি বসছে না ১৩ই পর্যন্ত
অজন্তা অ্যাপার্টমেন্টে পাঁচতলার ফ্ল্যাটে ছেলে রাহুল ও স্ত্রী রেণুকে নিয়ে থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত আর পি মাটা। অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকার মহিলাদের উত্যক্ত করার জন্য বেশ বদনাম ছিল রাহুলের। সে জন্য ওই অ্যাপার্টমেন্টে ছেলের ঢোকাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন রাহুলের বাবা। এমনকী, ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করেছেন বলে সম্প্রতি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন তিনি। এর পর থেকেই বাবার ফ্ল্যাটে ঢোকা বন্ধ ছিল রাহুলের। কিন্তু, ঘটনার দিন কোনও ভাবে সে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে।
এর পর বাবাকে একা পেয়ে ছুরি নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন রাহুল। প্রায় ৩০ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করেন বাবাকে। ছেলের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে কোনও রকমে হামাগুড়ি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন আর পি মেটা। কিন্তু, তাঁকে ধরে ফেলে গলার নলি কেটে দেন রাহুল। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন মা। স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও আক্রমণ করেন রাহুল। ওই একই ছুরি দিয়ে মাকে আঘাত করতে থাকেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল দুপুর আড়াইটে নাগাদ ওই ফ্ল্যাট থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে ভিড় জমান অ্যাপার্টমেন্টের অন্য বাসিন্দারা। ফ্ল্যাটের ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর হয়ে পড়েছিলেন আর পি মাটা। রাহুলের মাকেও ছুরি দিয়ে বার বার আঘাত করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পড়শিদের আসতে দেখে পাশের ফ্ল্যাটে পালিয়ে যায় রাহুল। উপায় না দেখে পুলিশ খবর দেন তাঁরা। এর পর সেই ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় রাহুল। পড়শিরা দরজা খোলার অনুরোধ করলে ভিতর থেকে শাসাতে থাকে সে।
আরও পড়ুন
ডিসি পুলিশ (ইস্ট) ওমবীর সিংহ জানিয়েছেন, পুলিশ রান্নাঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরিয়ে দেয় রাহুল। তীব্র বিস্ফোরণ কেঁপে ওঠে গোটা বিল্ডিং। বিল্ডিংয়ের একাংশে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণে পাশের ফ্ল্যাটের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জখম হয়েছেন তিন জন এসআই-সহ ১০ জন পুলিশ কর্মী। ওমবীর সিংহ বলেন, “জখম অবস্থাতেও রাহুলকে ধরে ফেলি আমরা। না ধরা পড়লে হয়তো আরও কয়েক জনকে মেরে ফেলত।”
পুলিশের দাবি, মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন না রাহুল। মার্চেন্ট নেভি-র কাজ থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে তারা। পুলিশের খাতাতেও নাম রয়েছে রাহুলের। গত বছর দিল্লির এক মহিলাকে যৌন নির্যাতনের দায়ে চার দিন তিহাড় জেলেও ছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy