বাণিজ্যে আমেরিকার সঙ্গে মতপার্থক্য কাটাতে চায় ভারত। রবিবার নয়াদিল্লিতে এক আলোচনাসভায় তা স্পষ্ট করে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি জানান, বাণিজ্য নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে সমস্যার সমাধানের জন্য ভারত সক্রিয় ভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। জয়শঙ্করের মত, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যে একটি সমঝোতা থাকা প্রয়োজন। তবে ভারতের উপর চাপানো মার্কিন শুল্ক যে অন্যায্য, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জয়শঙ্করের কথায়, “আমাদের সঙ্গে আমেরিকার কিছু সমস্যা রয়েছে— আমরা এখনও পর্যন্ত বাণিজ্য আলোচনায় কোনও সমঝোতায় পৌঁছোতে পারিনি। এর ফলে আমাদের উপর শুল্ক চাপানো হয়েছে। আমরা প্রকাশ্যে বলেছি এটি অন্যায্য।” এর পরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আমেরিকার অস্বস্তির কথাও তুলে ধরেন তিনি। রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনার কারণে দিল্লির উপর যে শুল্ক চাপানো হয়েছে, তা-ও ‘অন্যায্য’ বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
বস্তুত, আমেরিকার সঙ্গে একেবারে শুরুর দিকে যে দেশগুলি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল, তার মধ্যে ভারত অন্যতম। দীর্ঘ দিন ধরে আলোচনা চললেও কোনও ইতিবাচক ফল এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এরই মধ্যে গত জুলাই মাসে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসার জন্য আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান ভারতের উপরে। বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক কার্যকর রয়েছে। ভারত ছাড়া একমাত্র ব্রাজ়িলের উপরেই এমন চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা।
আরও পড়ুন:
রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসার কারণে মার্কিন ‘জরিমানা’ প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, “রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য দ্বিতীয় একটি শুল্ক চাপানো হয়েছে আমাদের উপর। অথচ অন্য দেশগুলিও রাশিয়া থেকে তেল কেনে। এমনকি যে দেশগুলির রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নেই, তারাও কেনে। এই সমস্যাগুলির সমাধান করা প্রয়োজন এবং আমরা তা নিয়ে সক্রিয় ভাবে কাজ করছি।” ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জানান, বিশ্বের বৃহত্তম বাজারগুলির মধ্যে একটি আমেরিকার বাজার। তাই বাণিজ্যে আমেরিকার সঙ্গে সমঝোতা থাকা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন তিনি।
সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতকে আশ্বাস দিয়েছেন, ট্রাম্পের শুল্কের কারণে দিল্লির যা যা ক্ষতি হচ্ছে, তা রাশিয়া পুষিয়ে দেবে। বেশ কিছু পণ্য ভারত থেকে আরও বেশি করে কেনার কথা ভাবছে মস্কো, তা-ও জানান পুতিন। তাতে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি কমবে বলেও আশাবাদী রুশ প্রেসিডেন্ট। যদিও সম্প্রতি ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে ফের বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়েছে। গত মাসেই দিল্লিতে এসে বৈঠক করে গিয়েছেন আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের প্রধান।