Advertisement
০৮ মে ২০২৪
T Raja Singh

বিজেপি বিধায়ক ‘নিষিদ্ধ’ ফেসবুকে

ফেসবুকে একটি বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকেদের গুলি করে মারার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন।

তেলঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিংহ

তেলঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৪৩
Share: Save:

রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ নিয়ে চাপের মুখে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যকারী এক বিজেপি বিধায়ককে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করল মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা।

তেলঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিংহ ফেসবুকে একটি বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকেদের গুলি করে মারার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। অভিযোগ ওঠে, ফেসবুকের ব্যবসায়িক ক্ষতি হতে পারে ভেবে সংস্থার পাবলিক পলিসি এগজিকিউটিভ আঁখি দাস কোনও ব্যবস্থা নিতে চাননি।

আজ রাজাকে ফেসবুকে ‘ব্যান’ করার পাশাপাশি ফেসবুকের পাবলিক, ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি ডিরেক্টর নিল পটস কংগ্রেস নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ফেসবুক যাতে নিরপেক্ষ থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে।

কংগ্রেসের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল ফেসবুকের সিইও জ়াকারবার্গকে চিঠি লিখে অভিযোগ তুলেছিলেন, ফেসবুক ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাক গলাচ্ছে। কেন্দ্রে শাসক দল বিজেপির নেতাদের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য সম্পর্কেও নরম মনোভাব নিচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতের পাবলিক পলিসি এগজিকিউটিভ আঁখি দাসের ভূমিকা ও তাঁর সঙ্গে বিজেপি-আরএসএসের যোগাযোগ নিয়েও বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলেছিল।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, নিল পটস বেণুগোপালকে লেখা চিঠিতে কোনও অভিযোগ অস্বীকার করেননি। তিনি জানিয়েছেন, ফেসবুক নিরপেক্ষ। বিদ্বেষের বিরুদ্ধে। ফেসবুকের পাবলিক পলিসি টিমে সব দেশেই বিভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ রয়েছেন। কারও রাজনৈতিক অবস্থান বা বিশ্বাসের ঊর্ধ্বে উঠেই ফেসবুকে কোনও মন্তব্য বা ছবির ক্ষেত্রে অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নিল জানান, কংগ্রেসের অভিযোগকে তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। ইতিমধ্যে শুধু বিজেপির নেতাদের সম্পর্কে নরম অবস্থান নয়, নরেন্দ্র মোদীর ভোট প্রচারেও ফেসবুকের সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এখন তার জবাবে ফেসবুকের এই চিঠি এবং একই সঙ্গে রাজাকে নিষিদ্ধের পদক্ষেপে প্রশ্ন উঠছে, এই তৎপরতা কি লোকদেখানো? কারণ, যে বিদ্বেষমূলক পোস্টের নিরিখে রাজাকে নিষিদ্ধ করা হল, সেটি ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই তারিখের। সেখানে রাজা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গুলি করে মারা উচিত বলে রব তুলেছিলেন। পোস্টটি তৎক্ষণাৎ সরিয়ে না দিয়ে দু’বছর পরে রাজাকে নিষিদ্ধ করার অর্থ কী, প্রশ্ন উঠেছে। তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে রাজার প্রতিক্রিয়া।

তাঁর কথায়, এ নিষেধাজ্ঞার কোনও অর্থ নেই। কারণ তিনি ফেসবুকে নেই-ই। ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে তিনি ফেসবুক ব্যবহার করছেন না। ২০১৮-য় তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যায় বলেও তাঁর দাবি।

ফেসবুকের মুখপাত্র এ দিন জানান, বিদ্বেষ ও হিংসায় উস্কানিমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে ফেসবুকের নীতি ভাঙার জন্য রাজাকে ফেসবুক থেকে ‘ব্যান’ করা হচ্ছে। নেটিজেনদের অনেকেরই বক্তব্য, শয়ে শয়ে বিদ্বেষমূলক পোস্ট রোজ ফেসবুকে জমা হচ্ছে। দু’বছর আগের পোস্ট নিয়ে এখন তৎপর হয়ে কী লাভ? কংগ্রেসের ডেটা অ্যানালিটিক্স টিমের চেয়ারম্যান প্রবীণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ফেসবুকের তরফে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ দেখার অপেক্ষায় থাকবে কংগ্রেস। ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ পোস্টের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সংশোধনী আনা হয় কি না, দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

T Raja Singh Facebook BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE