Advertisement
০৮ মে ২০২৪

আতঙ্কের বিবরণ দিয়ে প্রিয়ঙ্কাকে জড়িয়ে কাঁদলেন ওঁরা

জমি বিবাদে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গত কালই সোনভদ্রের পথে রওনা দিয়েছিলেন ‘দিদিজি’ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ প্রিয়ঙ্কাকে মাঝপথেই আটকে দেয়।

পাশে: সোনভদ্রে নিহতদের পরিজনের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ছবি: পিটিআই।

পাশে: সোনভদ্রে নিহতদের পরিজনের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

চোখেমুখে আতঙ্ক। ধুলোমাখা শরীর। অনেকটা পথ হেঁটে এসেছেন ‘দিদিজি’কে দেখতে। পুলিশ প্রথমে আটকালেও হল্লা শুরু হতেই দুর্গে যাওয়ার অনুমতি দিল। সেখানে ‘দিদিজি’কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন ওঁরা।

জমি বিবাদে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গত কালই সোনভদ্রের পথে রওনা দিয়েছিলেন ‘দিদিজি’ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ প্রিয়ঙ্কাকে মাঝপথেই আটকে দেয়। সেখান থেকে চুনার দুর্গের অতিথিশালায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ৫০ হাজার টাকা মুচলেকার বিনিময়ে মুক্তির প্রস্তাব দিলেও তা মানেননি প্রিয়ঙ্কা। জানিয়ে দেন, আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করে এক ইঞ্চি নড়বেন না।

প্রিয়ঙ্কাকে আটকানোর সমালোচনা করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা তো ৪-৫ জন নিয়ে গিয়েছিলেন। ওঁকে অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল। একই সঙ্গে বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা খুবই খারাপ। ওখানে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয় না।’’

প্রিয়ঙ্কাকে আটকানোর খবর রাতেই দাবানলের মতো ছড়ায়। আক্রান্তদের পরিবার ‘দিদিজি’র সঙ্গে দেখা করার জন্য চুনারের উদ্দেশে রওনা দেন। পুলিশ তাঁদের আটকে দিলে সকালে ফের দুর্গেই ধর্নায় বসেন প্রিয়ঙ্কা। পুলিশকে জানান, ‘‘পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে না দিলে আমি কিছু খাব না, জলও ছোঁব না।’’ শেষ পর্যন্ত পিছু হটে প্রশাসন।

ঘরে বসেই ১৭ তারিখের ঘটনা শোনেন তিনি। কী ভাবে ট্র্যাক্টরে চেপে দেড়শো লোক এসে প্রথমে লাঠি, পরে গুলি চালাল। কী ভাবে আহতদের অনেককে ফের লাঠিপেটা করল— শুনলেন সব। শুনলেন, দেড় মাস ধরে আদিবাসীরা পুলিশকে সব জানালেও ফল হয়নি। গুলি চালানোর দেড় ঘণ্টা পরে তারা আসে। ভুয়ো মামলাও চাপানো হয়েছে অনেকের উপর।

এ বার এঁদের নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন প্রিয়ঙ্কা, এগিয়ে দিলেন কথা বলার জন্য। তাঁরা বললেন, ‘‘পুলিশের মদতেই হামলা হয়েছে। দিদিজি এসেছেন শুনে আসছিলাম, পুলিশ আটকে দিয়েছে। অনেক কষ্টে এসেছি। দিদিজি ২ হাজার কিমি আসতে পারেন, আমরা পারব না?’’ প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘এঁদের পাঁচ দাবি আছে, আমিও তাতে একমত। এক, আক্রান্ত প্রতি পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। দুই, জমিতে চাষের মালিকানা দিতে হবে। তিন, মামলা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে করতে হবে। চার, মিথ্যে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। পাঁচ, গ্রামে ফিরেও যেন এঁরা নিরাপদ থাকেন।’’ সেই সঙ্গেই হুঙ্কার, ‘‘আমার উদ্দেশ্য পূরণ হল। কিন্তু আমি আবার আসব।’’ এ দিনই কংগ্রেস জানিয়েছে, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে দেবে দল।

এর পর প্রিয়ঙ্কাকে চুনার ছাড়ার অনুমতি দেয় প্রশাসন। দুর্গ ছেড়ে বারাণসী রওনা দেন প্রিয়ঙ্কা। সেখানে কাশী বিশ্বনাথ, কালভৈরব মন্দিরে পুজো দিয়ে দিল্লির পথে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Priyanka Gandhi Vadra Sonbhadra Uttar Pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE