‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে প্রথম বার গুজরাতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার বডোদরায় তাঁর রোডশোয়ে উপস্থিত হল কর্নেল সোফিয়া কুরেশির পরিবার। পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করার জন্য সিঁদুর অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেই অভিযানের বিষয়ে জনসাধারণের সামনে নিয়মিত তথ্য তুলে ধরার দায়িত্বে ছিলেন দুই মহিলা সেনা অফিসার। তাঁদের মধ্যে এক জন ছিলেন কর্নেল সোফিয়া। তাঁকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের ধমক খান মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি মন্ত্রী।
সোমবার বডোদরার হার্নি বিমানবন্দর থেকে শুরু হয় মোদীর রোডশো। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য বর্ণনা করে রাস্তার পাশে টাঙানো হয়েছে হোর্ডিং। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান স্থানীয়েরা। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কর্নেল সোফিয়ার বাবা তাজ মহম্মদ এবং মা হালিমা কুরেশি। প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ একটি কর্মসূচিতে সিঁদুর অভিযান নিয়ে মোদী সরকার এবং সেনার প্রশংসা করার সময়ে কর্নেল সোফিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে ভর্ৎসনা করে। মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভাষার ‘গোলমাল’ করে ফেলেছেন। কর্নেল সোফিয়ার পরিবার এই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জিও জানিয়েছিল। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যদিও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বিজয়ের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপও করা হয়নি। সোমবার মোদীর রোডশোয়ে উপস্থিত হলেন সেই কর্নেল সোফিয়ার বাবা-মা।
সোমবার অহমদাবাদেও একটি রোডশো রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। মনে করা হচ্ছে, সেখানে শামিল হতে পারেন ৫০ হাজার মানুষ। দু’দিনের গুজরাত সফরে ভুজ, দাহোদ, গান্ধীনগরে বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং উদ্বোধনের কথা রয়েছে মোদীর। এর মধ্যে ভুজে ৫৩ হাজার ৪১৪ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করার কথা রয়েছে তাঁর। প্রসঙ্গত, সিঁদুর অভিযানের পরে ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। তখন এই ভুজ লক্ষ্য করেও হামলার চেষ্টা করেছিল তারা। যদিও ভারতীয় সেনা সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে। এ বার এই ভুজেই কান্ডলা বন্দর পরিকাঠামো, সৌরবিদ্যুৎ, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং কিছু প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে চলেছেন মোদী। দাহোদে ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধনের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। আনন্দ-গোধরা, মহেসাণা-পালনপুর, রাজকোট-হড়মতিয়া রেললাইনের উদ্বোধনও করার কথা তাঁর। মঙ্গলবার গান্ধীনগরে একটি হাসপাতাল এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে তৈরি ২২ হাজার বাড়ি উদ্বোধনের কর্মসূচি রয়েছে মোদীর। অহমদাবাদে একটি হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা তাঁর।