মেনকার ‘গড়’ পিলিভীটে আবার বাঘের হামলায় মৃত্যু। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
উত্তরপ্রদেশের পিলিভীটে একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘের হামলায় মৃত্যু হল এক কৃষকের। এই নিয়ে এক মাসের মধ্যে তিন বার বাঘের হামলার ঘটনা ঘটল। ঘটনাচক্রে, এই পিলিভীটই পশুপ্রেমী তথা বিজেপি নেত্রী মেনকা গান্ধীর ‘গড়’। এখান থেকেই পাঁচ বারের সাংসদ হয়েছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর পুত্র বরুণই এই কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ।
পিলিভীটের সাংসদ থাকাকালীন লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়া, বাঘের হামলায় গ্রামবাসীদের মৃত্যু, কখনও গ্রামবাসীদের হামলায় বাঘের মৃত্যু— এ সব নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন মেনকা। পরবর্তী কালে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তার পরেও বার বার কেন পিলিভীটে বাঘের হামলা ঘটছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বন দফতর সূত্রে খবর, বছর পঞ্চান্নের এক কৃষক তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে পিলিভীট ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রে (পিটিআর) জঙ্গলের মধ্যে বুনো মাশরুম সংগ্রহ করতে ঢুকেছিলেন। সেই সময় হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কৃষকের আধখাওয়া দেহও উদ্ধার করেছে বন দফতর।
বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) নবীন খান্ডেওয়াল বলেন, “পুরানি দীপনগরের মাধোতান্ডা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের সীমানা থেকে দু’কিলোমিটার ভিতরে গিয়েছিলেন ওই কৃষক এবং তাঁর দুই সহযোগী।” বন দফতর সূত্রে খবর, মৃত কৃষকের নাম তোতারাম। তাঁর উপর বাঘ হামলা চালানোয় শ্রীকৃষ্ণ এবং রাম বাহাদুর নামে দুই সহযোগী তোতারামকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
ডিএফও জানিয়েছেন, তোতারামের আধখাওয়া দেহ জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছে। তাঁর ডান পা ছিল না। মনে করা হচ্ছে, বাঘে কামড়ে ছিঁড়ে নিয়েছে। এ ছাড়াও তাঁর গলায়, মুখে, ঘাড়ে গভীর ক্ষতের চিহ্ন মিলেছে। তোতারামের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পায়ের চিহ্ন দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে পূর্ণবয়স্ক কোনও পুরুষ বাঘ হামলা চালিয়েছিল।”
এই নিয়ে এক মাসের মধ্যে তৃতীয় হামলার ঘটনা ঘটল বলে জানিয়েছেন ডিএফও। আর সমস্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে জঙ্গলের তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই। শুধু তাই-ই নয়, বেশির ভাগ হামলায় আক্রান্তদের আধখাওয়া দেহ উদ্ধার হয়েছে। ডিএফও বলেন, “সবক’টি হামলার পিছনে একটিই বাঘ কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাঘটিকে খোঁজার কাজ চলছে। কৃষকের দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
ঘটনাচক্রে, এই পিলিভীটেরই সাংসদ বরুণ গান্ধী। তাঁরই সংসদীয় এলাকায় বার বার বাঘের হামলার মতো ঘটনা ঘটায় গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বন দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অনেকেই সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে গোপনে ঢুকে পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy