Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Boris Johnson

কথা মানলেই আসুন বরিস, চাল চাষিদের 

মঙ্গলবার পঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষক সংগঠনগুলির দাবি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যেন ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে দিল্লিতে না আসেন।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

 নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২১
Share: Save:

কেন্দ্রের উপরে চাপ তৈরির জন্য পথ অবরোধ করে ঘিরে রাখা হয়েছে দিল্লি। শুরু হয়েছে রিলে-অনশন। এই সব কিছুর পরে কৃষি আইন নিয়ে মোদী সরকারকে পিছু হটতে বাধ্য করার লক্ষ্যে এ বার ‘কূটনৈতিক চাপ’ তৈরির কৌশল নিলেন প্রতিবাদী চাষিরা।

ব্রিটেনের ৩৬ জন সাংসদ সে দেশের বিদেশ সচিবকে চিঠি লিখে ভারতে কৃষক আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার পঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষক সংগঠনগুলির দাবি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যেন ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে দিল্লিতে না আসেন। এ বিষয়ে বরিসের উপরে চাপ তৈরির জন্য তাঁরা ব্রিটিশ শিখ সাংসদদের আর্জি জানাবেন বলেও আজ জানিয়েছেন কৃষক নেতারা।

আজ দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার সিংঘুতে কৃষক সংগঠনগুলির বৈঠকের পরে কৃষক নেতা কুলবন্ত সিংহ সাঁধু বলেন, ‘‘ব্রিটেনের পঞ্জাবি সাংসদদের বলছি, কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের দাবি না-মানা পর্যন্ত তাঁরা যেন বরিসকে ভারতে আসতে বাধা দেন।’’

আরও পড়ুন: কাল কাঁথির সভায় আমন্ত্রণ শিশিরকে, জানালেন, অসুস্থ তাই থাকছেন না

আরও পড়ুন: নেপালে গভীর সঙ্কট, দলীয় চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরলেন ওলি

এমনিতেই কৃষক আন্দোলনের জেরে পঞ্জাব-হরিয়ানায় রাজনৈতিক চাপে বিজেপি। এ দিন অম্বালায় পুর নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর কৃষকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। তাঁর কনভয় আটকে কালো পতাকা দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীরা মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির উপরেই লাঠি মারতে শুরু করেন। পঞ্জাব-হরিয়ানায় বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি নেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। তাঁদের বয়কটেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষকেরা। এই রাজনৈতিক চাপের সঙ্গে এ বার কূটনৈতিক চাপও প্রয়োগ করতে চাইছেন প্রতিবাদী চাষিরা।

ব্রিটেন, কানাডায় প্রচুর শিখের বাস। ব্রিটিশ শিখ সাংসদ তনমনজিৎ সিংহর উদ্যোগেই ৩৬ জন সাংসদ বিদেশ সচিবকে চিঠি লিখেছিলেন। তাতে অন্যান্য ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংসদের সঙ্গে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনও সই করেন। সেই সূত্রেই না-আসার অনুরোধ বরিসকে।

রবিবার কৃষি মন্ত্রক চিঠি লিখে কৃষক সংগঠনগুলিকে ফের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু আজ কৃষক নেতারা ঠিক করেছেন, বুধবার ৪৭২টি কৃষক সংগঠনের আলোচনার পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

তার আগে আজ সিংঘুতে রক্তদান শিবিরের পরে কৃষকেরা রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে দাবি জানিয়েছেন, তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হোক। বিভিন্ন শ্রমিক, যুব ও ছাত্র সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বুধবার তাদের সদস্যরা মধ্যাহ্নভোজন করবেন না। ২৬-২৭ ডিসেম্বর কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের এক মাস পূর্ণ হবে। সে দিন জিয়ো মোবাইল, ফরচুন সংস্থার পণ্য, রিলায়্যান্সের পেট্রল পাম্পের মতো অম্বানী-আদানি গোষ্ঠীর পণ্য ও পরিষেবা বয়কটের প্রচার হবে। পঞ্জাবে মান্ডির এজেন্টদের আয়কর নোটিস ও ইডি-র তল্লাশির পরে আজ থেকে চারদিন সমস্ত মান্ডি বন্ধও থাকছে। কৃষক নেতাদের সিদ্ধান্ত, ২৩ ও ২৬-২৭ ডিসেম্বর শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহের শহিদ দিবস পালন করা হবে। ২৬-২৭ ডিসেম্বর হরিয়ানার সমস্ত টোল প্লাজা দখল করা হবে। কেউ টোল দেবেন না। পঞ্জাবের জাতীয় সড়কে যাবতীয় টোল প্লাজা ইতিমধ্যেই দখলে। এ দিন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর থেকে ট্র্যাক্টর মিছিল করে কৃষকেরা দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। পিলভিট ও শাহজাহানপুরের চাষিদের রামপুরে পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যারিকেড ভেঙে তাঁরা এগিয়েছেন।

কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর আজ ফের বলেছেন, সরকার বৈঠকে বসতে তৈরি। মন্ত্রকের দাবি, এ দিন দু’টি সংগঠন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কৃষি সংস্কারে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু এ সব সরকারের সাজানো সংগঠন বলে অভিযোগ। অকালি দলের প্রধান সুখবীর বাদলের অভিযোগ, আলোচনায় বসার ভান করে কৃষক সংগঠনগুলিকে বদনাম করতে চাইছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Boris Johnson Farm Bill farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE