ছত্তীসগঢ়-তেলঙ্গানা সীমান্তে অবস্থিত বিজাপুরের কারেগুট্টা পাহাড়ের ঘন জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ে চলছে ‘দেশের বৃহত্তম মাওবাদী দমন অভিযান।’ মঙ্গলবার সেই অভিযান ষোড়শ দিনে পা রেখেছে। নিরাপত্তাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এ বাবের মতো ওই এলাকায় এটিই তাদের ‘শেষ অভিযান’ হতে চলেছে। ফলে মাওবাদীদের নিকেশ করতে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নেমেছেন তাঁরা। অন্য দিকে, অধস্তনদের বাঁচাতে গিয়ে রবিবার মাওবাদীদের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে বাঁ পা খুইয়েছেন সিআরপিএফের কোবরা বাহিনীর এক সদস্য। অসম সাহসিকতার জন্য পদকও পেতে পারেন তিনি।
আরও পড়ুন:
রবিবার অভিযানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-এর সশস্ত্র শাখা পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির (পিএলজিএ) পুঁতে রাখা একটি আইইডি বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন সিআরপিএফের ২০৪ নম্বর কোবরা ব্যাটালিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট সাগর বোরাডে। ৩২ বছর বয়সি ওই যুবকের বাঁ পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনী সূত্রে খবর, জখম অবস্থাতেও একজন আহত জওয়ানকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। সিআরপিএফ জানিয়েছে, সাগরের নাম সাহসিকতার পদকের জন্য সুপারিশ করা হবে। প্রায় ১৫ দিন ধরে চলা ওই অভিযানে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০ জন জওয়ান আহত হয়েছেন। উদ্ধার হয়েছে শ’খানেক আইইডি।
গত ২১ এপ্রিল থেকে কারেগুট্টা পাহাড় এলাকায় শুরু হয়েছে মাওবাদী দমন অভিযান। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী ‘কোবরা’র পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়ের সশস্ত্র পুলিশ ও ডিসট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড বাহিনী, মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০, তেলঙ্গানা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনী রয়েছে অভিযানকারী দলে। পুলিশের এক জন ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক জন প্রাণভয়ে পালালেও এখনও বেশ কয়েক জন মাওবাদী এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছেন। কেউ আবার পাল্টা প্রত্যাঘাতের পরিকল্পনা করছেন। তবে গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও সেনার যৌথ দল। যত ক্ষণ না মাওবাদীরা ধরা পড়ছেন, অভিযান চলবে। ইতিমধ্যে গত রবিবার মাওবাদীদের ‘অন্তিম হুঁশিয়ারি’ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত আত্মসমর্পণ না করলে কারেগুট্টা এবং দুর্গামগুট্টা পাহাড়ে পিএলজিএ-র ১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘চূড়ান্ত অভিযান’ চালানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেনা।