পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্তে নয়া মোড়! এ বার এনআইএ-র তদন্তে জানা গেল, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার নেপথ্যে হাত ছিল ১৯৯৯ সালে কন্দহর বিমান অপহরণের ঘটনায় সম্পর্কিত মুস্তাক আহমেদ জারগারের। মুস্তাক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল উমর মুজাহিদিনের প্রধান। এনআইএ সূত্রে খবর, পহেলগাঁও কাণ্ডে যোগ থাকতে পারে মুজাহিদিনেরও।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এনআইয়ের দাবি, পহেলগাঁওয়ে ‘ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার’দের (জঙ্গিদের স্থানীয় সহযোগী) গোপনে সাহায্য করেছিলেন মুজাহিদিনের সদস্যেরা। গত কয়েক দিন ধরে সন্দেহভাজনদের টানা জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনায় আড়াল থেকে মদত জুগিয়েছিলেন মুস্তাক এবং মাসুদ আজহারও। প্রসঙ্গত, মুস্তাক ও মাসুদ পঁচিশ বছর আগে কন্দহরে যাত্রিবাহী বিমান অপহরণের পর ভারত সরকার ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। সেই থেকে পাকিস্তানেই দুই জঙ্গি। মুস্তাক আদতে শ্রীনগরের বাসিন্দা। তাই সেখানকার স্থানীয় সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে খবর। ২০২৩ সালে জাতীয় তদন্তকারী দল তাঁর বাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে। তাঁর সংগঠন মুজাহিদিনও ভারত সরকার কর্তৃক ‘নিষিদ্ধ’ বলে ঘোষিত হয়।
আরও পড়ুন:
১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ১৭৬ জন যাত্রী-সহ ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ বিমানটি ছিনতাই করেছিল একদল জঙ্গি। প্রথমে দুবাইয়ে কয়েক জন যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছু যাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোও হয়। সেখান থেকে বিমান নিয়ে যাওয়া হয় আফগানিস্তানের তালিবান নিয়ন্ত্রিত কন্দহর বিমানবন্দরে। সেখানে পৌঁছে ১৫৫ জন যাত্রীর বিনিময়ে ভারতে বন্দি ৩৬ জন কুখ্যাত জঙ্গিকে ছেড়ে দিতে হবে বলে দাবি তোলে তারা। সঙ্গে মুক্তিপণ বাবদ ২০ কোটি মার্কিন ডলারও চাওয়া হয়। দু’পক্ষের দীর্ঘ দর কষাকষির পর শেষমেশ মুস্তাক-সহ তিন জঙ্গিকে তাদের হাতে তুলে দিতে সম্মত হয় বাজপেয়ী সরকার। পণবন্দি যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে মুস্তাকের পাশাপাশি আরও দুই কুখ্যাত জঙ্গি ওমর শেখ ও মাসুদ আজহারকে দিল্লি থেকে আফগানিস্তানের কন্দহরে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষমেশ ৩১ ডিসেম্বর তিন জঙ্গির বিনিময়ে পণবন্দি যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
অভিযোগ, ভারতের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন মুস্তাক। পাকিস্তানে বসে ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতামূলক হামলায় মদত দিচ্ছেন তিনি। কাশ্মীরে মুজাহিদিন-সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার নেপথ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাঁর। সেই আবহে এ বার পহেলগাঁও কাণ্ডেও নাম জড়াল সেই মুস্তাকের।