Advertisement
E-Paper

চেন্নাই বিমানবন্দর রবিবারও চালু হবে কি না, সন্দেহ

আগামী রবিবারে চেন্নাই থেকে উড়ান চালু হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যেই। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চেন্নাইয়ের রানওয়ে প্রায় ৩ ফুট জলের তলায়। সেই জল খুব ধীরে ধীরে নামছে। সূত্রের খবর, রানওয়েতে জল নেমে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে বিমান ওঠানামা করা সম্ভব নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৯:৫৪

আগামী রবিবারে চেন্নাই থেকে উড়ান চালু হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যেই।

বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চেন্নাইয়ের রানওয়ে প্রায় ৩ ফুট জলের তলায়। সেই জল খুব ধীরে ধীরে নামছে। সূত্রের খবর, রানওয়েতে জল নেমে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে বিমান ওঠানামা করা সম্ভব নয়। নিয়ম অনুযায়ী সেই রানওয়েকে বিমান ওঠানামার উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রানওয়ে থেকে জল নামার পরে বিমানের চাকা পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে, প্রথমে রানওয়ের উপরে জমে থাকা কাদা সরাতে হবে। তার পরে রানওয়ের ঘর্ষণ-ক্ষমতা ঠিক রয়েছে কি না তা যাচাই করতে পরীক্ষামূলকভাবে বিমান নামাওঠা করবে। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশনের সেই বিমান সবুজ সঙ্কেত দিলে তবেই যাত্রী বিমান ওঠানামা শুরু করতে পারবে। একই ভাবে জল নামার পরে সমীক্ষা করা হবে গোটা অ্যাপ্রন এলাকারও। সেখান দিয়েই বিমান চলাচল করে।

চেন্নাই বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হলেও তার আকাশের অনেক উপর দিয়ে দূর পাল্লার বিামনগুলি উড়ে যাচ্ছে নিয়মিত। সেই বিমানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা চেন্নাই এটিসি-র। বুধবার সকাল থেকে চেন্নাই এটিসি-র বিদ্যুৎ সংযোগ জেনারেটর মারফত চালানো হচ্ছিল। কিন্তু, সেই জেনারেটরে জল ঢুকে যাওয়ায় বুধবার রাতে বসে যায় চেন্নাই এটিসি। তাকে চারপাশ থেকে সাহায্য করতে শুরু করে কলকাতা, মুম্বই, বেঙ্গালুরু এটিসি। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে চেন্নাই এটিসি-তে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনা গিয়েছে। আবার চালু হয়েছে তা। তবে, আশঙ্কা রয়েছে যে কোনও মূহূর্তে আবার বসে যেতে পারে চেন্নাই এটিসি।

চেন্নাই বিমানবন্দরের এক অফিসার বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, ‘‘কী ভাবে কত তাড়াতাড়ি চেন্নাই থেকে উড়ান চালু করা যায় তা নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে। আমাদের প্রথম কাজ হবে তাড়াতাড়ি রানওয়ে চালু করে দেওয়া। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে জল নামানোর কাজ করা হচ্ছে।’’ এ কারণে, চেন্নাই বিমানবন্দরে এই মূহূর্তে বেশ কয়েকটি পাম্প বসানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিমানবন্দরের চারপাশে এক সময়ে জলা জমি ছিল। এর আগে বৃষ্টি হওয়ার পরে বিমানবন্দরের জল সেই জলা জমিতে চলে যেতো। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে সেই সব জলা জমি বুজিয়ে বাড়ি-ঘর হয়েছে। ফলে, নিকটবর্তী অ্যাডেয়ার নদীর উপরেই এখন ভরসা। কিন্তু, আপাতত সেই নদীর জলও উপচে পড়ছে। ফলে, বিমানবন্দরের ভিতর থেকে জমা জল পাম্প করে কোথায় ফেলা হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

সূত্রের খবর, নতুন টার্মিনালের বেসমেন্টে, যেখানে সমস্ত বিদ্যুতের সংযোগকারী লাইন রয়েছে, তা আপাতত জলের তলায়। ফলে, বিদ্যু সংযোগ বিচ্ছিন্ন। পাম্প চালিয়ে বেসমেন্টের জলও বাইরে আনার প্রবল চেষ্টা করা হচ্ছে। অফিসারদের কথায়, ‘‘আলো, জল, কনভেয়ার বেল্ট, লিফট, এক্স-রে মেশিন সব কিছুই তো বিদ্যুৎ-চালিত। ফলে, বেসমেন্টের জল সরিয়ে তা পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনাটা এখন অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ছে। এ সব না চললে বিমানবন্দর চালু করাই যাবে না। ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অফিসারেরা জানিয়েছেন, বেসমেন্টের বিদ্যুতের কেবল-এর ভিতরেও নাকি জল ঢুকে গিয়েছে।’’

বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্তও চেন্নাই বিমানবন্দরের টার্মিনালের ভিতরে আটকে ছিলেন প্রায় আড়াইশো জন যাত্রী। টার্মিনালের যে দিকটি পুরনো সে দিকে এ দিন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। যাত্রীদের রাখা হয়েছে মূলত সেই দিকে। অফিসারদের কথায়, ‘‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি তাঁদের সময় মতো খাবার, জল দিতে। সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে বিমাসংস্থাগুলিও।’’ আটকে পড়া যাত্রীদের বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের। প্রচুর বিদেশি যাত্রীও আটকে রয়েছেন। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বিমানবন্দরের ভিতরে আটকে পড়া যাত্রীদের অনেককেই বাসে করে বেঙ্গালুরু পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে যে যার মতো শহরে ঢুকে পড়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় হায়দরাবাদ থেকে যাত্রীদের নিয়ে চেন্নাই বিমানবন্দরের ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে আরাক্কোনামে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটি রাজালিতে নেমেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। সেখান থেকে যাত্রীদের তুলে নামিয়ে দিয়েছিল হায়দরাবাদে। বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে একই ভাবে হায়দরাবাদ থেকে রাজালিতে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। চেন্নাই বিমানবন্দরে আটকে পড়া বেশ কিছু যাত্রীকে এ দিন বায়ুসেনার হেলিকপ্টার করে তুলে আনা হয়েছিল রাজালিতে। সেখান থেকে তাঁরা বিমানে করে পৌঁছোন হায়দরাবাদে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, যে যাত্রীদের কাছে চেন্নাই যাতায়াতের বৈধ টিকিট রয়েছে, তাঁরা অতিরিক্ত কোনও খরচ ছাড়াই আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, মাদুরাই, কোচি সহ দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর থেকে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন।

একই সুবিধা দিচ্ছে ইন্ডিগোও। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, চেন্নাইতে আটকে পড়া বহু যাত্রী যেহেতু বেঙ্গালুরু পৌঁছোনর চেষ্টা করছেন, তাই শুক্রবার বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে দিল্লি, মুম্বই ও হায়দরাবাদে অতিরিক্ত উড়ান চালাবে তারা। সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, যে যাত্রীদের কাছে চেন্নাই থেকে ইন্ডিগোর বিমানের বৈধ টিকিট ছিল, তাঁদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনও টাকা না নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও, দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরু হয়ে সড়ক পথে চেন্নাইতে শুকনো খাবার, জামাকাপড় ও ওষুধ পাঠানোরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে ইন্ডিগোর তরফে জানানো হয়েছে।

flights from chennai airport tunnel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy