আয় বাড়াতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রেল। ফাইল চিত্র।
অতিমারির দীর্ঘস্থায়ী দৌরাত্ম্য আর আর্থিক মন্দায় গত দু’বছরে রেলের পণ্য পরিবহণ খুবই ধাক্কা খেয়েছিল। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে রেল। এতটাই যে, অব্যবহৃত বাতানুকূল কামরায় চকলেট এবং নানান মিষ্টান্ন বহন করছে তারা। ফলও মিলছে। এ-পর্যন্ত চলতি অর্থবর্ষের সব মাসেই বিগত বছরের তুলনায় পণ্য বহন বেড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া সেপ্টেম্বরেও বিগত বছরের তুলনায় ৩.৬২ শতাংশ বেশি পণ্য বহন করেছে রেল। তার থেকে আয় হয়েছে ৯.১৯ শতাংশ বেশি।
সেপ্টেম্বরে রেল ১০,৮১৫ কোটিরও বেশি টাকা আয় করেছে। আর ১০৬ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহণ করেছে ওই মাসেই। বিগত বছরের সেপ্টেম্বরে তার পরিমাণ ছিল ১০২.৩ মিলিয়ন টন। সে-বার ওই পণ্য পরিবহণ করে রেলের আয় হয়েছিল ৯৯০৫ কোটি টাকা। এ বছর সেই লক্ষ্যমাত্রা অনেকটা ছাড়িয়ে গিয়েছে।
রেলের খবর, পণ্য পরিবহণ থেকে আয় বাড়াতে সারা দেশে তাদের সব অঞ্চলের অধীনে থাকা ডিভিশন মরিয়া চেষ্টা করছে। যাত্রিবাহী ট্রেনের সংখ্যা আগের তুলনায় কমে যাওয়ায় পণ্যবাহী ট্রেন অনেক বেশি সংখ্যায় চালানো হচ্ছে। ট্রেনের গতি বাড়িয়ে পরিবহণের সময়ও কমিয়ে আনা হয়েছে। তার ফলে আরও বেশি সংখ্যায় পণ্যবাহী ট্রেন চালানো যাচ্ছে। রেলপথে জট কমাতে প্রায়ই দু’টি বা তিনটি মালগাড়ি একসঙ্গে জুড়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর ফলে সময় সাশ্রয় হচ্ছে বলেই রেলের দাবি।
রেল সূত্রের খবর, তাদের এ-হেন মরিয়া চেষ্টার ফলে যে-সব পণ্য এত দিন মূলত সড়কপথে নিয়ে যাওয়া হত, সেগুলিও এখন রেলগাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি অব্যবহৃত বাতানুকূল কামরায় চাপিয়ে ১৬৩ টন চকলেট এবং অন্যান্য মিষ্টান্ন গোয়া থেকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নতুন বাইক, স্কুটি এবং চার চাকার গাড়িও ট্রেনে পরিবহণ করছে একাধিক ডিভিশন। সেই জন্য পুরনো রেকের অদলবদল ঘটিয়ে তাকে পরিবর্তিত চেহারা দেওয়া হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলও পণ্য পরিবহণ থেকে উল্লেখযোগ্য হারে আয় বাড়িয়েছে। সম্প্রতি পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন থেকে গুয়াহাটি, অমৃতসর পর্যন্ত বিভিন্ন পার্সেল এক্সপ্রেস ট্রেন চালানো হয়েছে। ওই সব ট্রেনে স্কুলব্যাগ, জুতো, পান, মাছ থেকে শুরু করে অনেক কিছুই পরিবহণ করা হয়েছে। রেল জানিয়েছে, শুধু পার্সেল এক্সপ্রেসের ১৭টি ট্রিপ চালিয়ে এক কোটিরও বেশি টাকা আয় হয়েছে সেপ্টেম্বরে।
রেলের এক আধিকারিক বলেন, "কয়লা, লোহা, রাসায়নিক সার, চুনাপাথরের মতো চিরাচরিত পণ্য ছাড়াও স্থানীয় ভাবে যেখানে যে-পণ্য পরিবহণের সুযোগ রয়েছে, সেটাই বহন করা হচ্ছে। কাজে লাগানো হচ্ছে সব ধরনের সুযোগ।" ওই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে এ রাজ্যের চাল, বালি, ইট-সহ অনেক জিনিসপত্রই রেলপথে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy