পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জন্য পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ‘চরমপন্থী ধর্মনীতি’ই দায়ী! বৃহস্পতিবার এমনটাই দাবি করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মুনিরের এ হেন মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো হয় বলে দাবি বিদেশমন্ত্রীর।
নেদারল্যান্ডসের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ে বর্বরোচিত ওই হামলার লক্ষ্যই ছিল কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পকে পঙ্গু করে দেওয়া এবং ধর্মীয় বিভেদ উস্কে দেওয়া। ধর্ম দেখে বেছে বেছে ২৬ জনকে তাঁদের পরিবারের সামনেই হত্যা করা হয়েছিল। এটি এমন ভাবে করা হয়েছিল যাতে পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা কাশ্মীরের অর্থনীতির মূলভিত্তি।’’ উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার কয়েক দিন আগেই মুনির দ্বিজাতি তত্ত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধর্মীয় বিভেদ ‘উস্কে’ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। কথাপ্রসঙ্গে এসেছিল কাশ্মীর সমস্যার বিষয়টিও। সেই প্রসঙ্গ টেনেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টা বুঝতে হলে আপনাকে পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে, বিশেষ করে তাদের সেনাপ্রধানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। আসিম মুনিরের দৃষ্টিভঙ্গি চরম ধর্মীয়। পহেলগাঁওয়ে যে ভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল, তার সঙ্গে এ হেন মতাদর্শের স্পষ্টতই যোগসূত্র রয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
শুধু তা-ই নয়, এর পর পহেলগাঁও কাণ্ডের পর দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় জয়শঙ্করকে। সে সময়েই ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে আমেরিকার ভূমিকার কথা ওঠে। এ প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর সাফ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতিতে ‘মধ্যস্থতা’ করার যে দাবি আমেরিকা জানিয়ে আসছে, তা সত্য নয়। গত ১০ মে পাকিস্তানই প্রথম যুদ্ধবিরতির পক্ষে আলোচনার সূচনা করেছিল। হটলাইনে যোগাযোগ হয় দু’দেশের। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হয়েছিল। আমরা আমেরিকা-সহ সব দেশকেই বলি, যদি তারা সমঝোতা চায়, তা হলে তাদের সরাসরি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর সেই কারণেই এটা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জেনারেল মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উত্তরণের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মন্ত্রিসভা। মঙ্গলবার থেকেই তা কার্যকর হয়েছে। প্রয়াত প্রাক্তন সেনাশাসক আয়ুব খানের পর পাক সেনার দ্বিতীয় অফিসার হিসাবে মুনির পেয়েছেন ‘পাঁচ তারা’ বিশিষ্ট পদ। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনিয়ান-আন-মারসুস’-এর সাফল্যের পুরস্কারস্বরূপ ওই পদে উন্নীত করা হয়েছে পাক সেনাপ্রধানকে। সেই আবহে এ বার মুনিরকে নিশানা করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী।