Advertisement
E-Paper

গুলি চললেই শাস্তি, হাতি তাড়াতে হিমসিম বনকর্মীরা

লোকালয়ে ঢুকে পড়া বুনো হাতি তাড়াতে গিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন বনকর্মীরা। এক দিকে হাতির হানায় প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা। প্রাণরক্ষায় গুলি চালালে সাসপেন্ড! সে সব না হলেও হাতি তাড়াতে দেরি হলে আম জনতা চড়াও হচ্ছেন তাঁদের উপরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২১

লোকালয়ে ঢুকে পড়া বুনো হাতি তাড়াতে গিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন বনকর্মীরা। এক দিকে হাতির হানায় প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা। প্রাণরক্ষায় গুলি চালালে সাসপেন্ড! সে সব না হলেও হাতি তাড়াতে দেরি হলে আম জনতা চড়াও হচ্ছেন তাঁদের উপরে। কয়েক দিন ধরেই হাতির হানায় ফসল নষ্ট হচ্ছে অসমের বিভইন্ন প্রান্তের গ্রামে। জঙ্গলে কমেছে হাতির খাদ্য। তাই বসতিতে হানা দিচ্ছে তারা। হাতির সামনে পড়ে গত কালও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু হাতি তাড়ানোর মতো পর্যাপ্ত বনকর্মী বা পরিকাঠামো সব এলাকায় থাকে না। তাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই হাতি তাড়াতে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। গত কাল যোরহাটের মরিয়নিতে গিবন অভয়ারণ্য থেকে বেরিয়ে আসা হাতির পাল সেনা ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের চত্বরে ঢুকে পড়ে। তিতাবরের রেঞ্জার বিকেন পেগুর নেতৃত্বে বনকর্মীরা হাতি তাড়াতে যান। আচমকা একটি হস্তিনী অনন্ত বরা নামে এক বনকর্মীকে ধাওয়া করে। উপায় না দেখে, প্রাণ বাঁচাতে হাতির দিকে .৩১৫ বোরের রাইফেল থেকে তিন রাউন্ড গুলি চালান তিনি। হাতিটি অন্য দিকে চলে যায়। কিন্তু পরে ঘটনাস্থল থেকে অল্প দূরে ওই হস্তিনীর মৃতদেহ মেলে। বরার ছোঁড়া একটি গুলি হাতির ডান কান ভেদ করে মগজে লাগায় তার মৃত্যু হয়েছিল। মৃত হস্তিনীর বয়স ১২-১৪ বছর। এমনিতেই কয়েক দিনে ট্রেনের ধাক্কায় ১০টি হাতি মারা যাওয়ায় ক্ষিপ্ত ছিলেন বনমন্ত্রী প্রমীলারানি ব্রহ্ম। মরিয়নিতে হাতির মৃত্যুর কথা জানতে পেরেই তিনি বরাকে সাসপেন্ড করে দেন।

কিন্তু বনকর্মীদের মতে, হাতি বা গন্ডার তাড়া করলে গুলি না চালালে মৃত্যু নিশ্চিত। বনরক্ষীদের অধিকাংশই অস্থায়ী কর্মী। তাঁদের রাইফেল ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ এক বারই হয়। নিশানা অনুশীলনের সুযোগ মেলে না। অধিকাংশ সময় পুরনো রাইফেল ‘জ্যাম’ হয়ে গুলিও বের হয় না। হাতি বা গন্ডার তেড়ে এলেও নেই গুলি চালানোর অনুমতি। এক বনকর্তার অভিযোগ, খুবই কম বেতনে রাতদিন জঙ্গলে পাহারা দেওয়া বনকর্মীদের প্রাণে বাঁচার অধিকারও কি নেই? বন্যপ্রাণী তাড়া করে এলে গুলি চালানো মানা। পরিস্থিতি এমনই, হয় হাতি বা গন্ডার তাঁদের মারবে না হলে চাকরি খোয়াতে হবে।

গত রাতে গোয়ালপাড়ার দরংগিরিতেও অঘটন ঘটে। দরংগিরি মেজেংপারা এলাকায় কয়েক দিন ধরে ঘুরছে হাতির পাল। মেজেংপাড়া গ্রাম থেকে হাতি তাড়াতে গিয়েছিলেন বনরক্ষীর দল। হাতির আক্রমণে মারা যান রংজুলি রেঞ্জের কর্মী ভূপেন ওরাং (৫০)।

বন দফতর সূত্রে খবর, হাতি তাড়ানোর জন্য প্রয়োজন শটগান। কিন্তু তার সংখ্যা কম। তাই রাজ্যের সব রেঞ্জে বনকর্মীদের হাতে তা দেওয়া যায়নি। শটগানের ছররা গুলি হাতিকে জখম করলেও আঘাত মারাত্মক হয় না। কিন্তু রাইফেলের গুলি একেবারে ভিতরে ঢুকে যায়। যা প্রাণঘাতী হয়। রাজ্যের অধিকাংশ অস্থায়ী বনকর্মী নিরস্ত্র থাকেন। খালি হাতেই হাতি তাড়াতে যান তাঁরা। তাই হাতি তাড়া করলে পালিয়ে বাঁচা ছাড়া উপায় থাকে না।

এ দিকে ঢেকিয়াজুলির লালুকে বুনো হাতির তাণ্ডবে ক্ষিপ্ত জনতা। গত রাতে হাতির পাল বিস্তর খেত নষ্ট করে। অনেক বাড়ি ভাঙে। বন বিভাগ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিক্ষোভ দেখায় জনতা।

Elephant Forest Officer Elephant Drive Away
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy