Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ ভোপালে

বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের ঘটনা। নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁকে এক দফা ধর্ষণের পরে দূরে গিয়ে চা-গুটখা খেয়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ভোপাল শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৫
Share: Save:

রাজ্যের জন্মদিন পালনের ঘনঘটায় চাপাই পড়ে গিয়েছিল গত মঙ্গলবারের ঘটনাটা। প্রকাশ্যে এসেছে আজ। কারণ, পুলিশ প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগই নিতে চায়নি। শেষে নির্যাতিতার বাবা-মা ধরে এনেছেন দুই অভিযুক্তকে। তার পরে নড়ে বসেছে পুলিশ।

বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের ঘটনা। নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁকে এক দফা ধর্ষণের পরে দূরে গিয়ে চা-গুটখা খেয়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। প্রথমে ছিল দু’জন। পরে আসে আরও দু’জন। তিন ঘণ্টা ধরে চলে অত্যাচার। আর এই বর্ণনা শুনে ১৯ বছরের মেয়েটিকে হাসতে হাসতে আইনরক্ষকেরা বলেছিল, সিনেমার গল্প ফাঁদছেন!

ঘটনাচক্রে, নির্যাতিতার বাবা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। মা আছেন সিআইডি-তে। ক্ষুব্ধ রাজ্যবাসী প্রশ্ন তুলেছে, পুলিশের মেয়েরই যখন কোনও নিরাপত্তা নেই— আম নাগরিক তো কোন ছার! তোলপাড়ের পরে পুলিশের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে। ধরা পড়েছে চার অভিযুক্তই। সাসপেন্ড পাঁচ পুলিশ।

আইএএসের কোচিং ক্লাস থেকে মঙ্গলবার সন্ধে সাতটা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন তরুণীটি। হাবিবগঞ্জ স্টেশনের কাছে শর্টকাট ধরেন। অভিযোগ, সেখানেই পথ আটকায় গোলু বিহারি নামে এক ব্যক্তি। গোলুর বিরুদ্ধে নিজের শিশুকন্যাকে খুনের মামলা ঝুলছে। হাত ধরে টানতে গেলে গোলুকে লাথি মেরে ফেলে দেন মেয়েটি। অভিযোগ, তখন গোলু ডেকে আনে তার আত্মীয় অমর ভুন্টুকে। দু’জনে ওই তরুণীকে নিয়ে যায় পরিত্যক্ত একটি কালভার্টের কাছে। পাথর মেরে জখম করে তাঁকে। তার পর মুখ-হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে। দু’জনেরই মুখে ছিল মদের গন্ধ। এক সময়ে ভুন্টুকে ‘শিকারের’ পাহারায় রেখে চা-গুটখা কিনতে যায় গোলু। সে ফিরলে তরুণী একটা ভদ্রস্থ পোশাক চান। কারণ, পরনের জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়েছিল দুই ধর্ষক।

কাছেই বস্তিতে গোলুর বাড়ি। সেখান থেকে সে জামা নিয়ে আসে। কিন্তু সঙ্গে আনে রাজেশ ও রমেশ নামে দুই সঙ্গীকে। শুরু হয় পালা করে চার জনের অত্যাচার। রাত দশটা নাগাদ নির্যাতিতার দুল, ঘড়ি, ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলের মাত্র ৫০ মিটার দূরে আরপিএফের ফাঁড়ি। কিছুই টের পায়নি তারা। কোনও মতে সেই ফাঁড়িতে যান মেয়েটি। সেখান থেকে ফোন করলে বাবা তাঁকে নিয়ে যান।

হেনস্থার তখনও বাকি ছিল। পরের দিন ডায়েরি করতে প্রথমে কে এম নগর থানায় যান তরুণীটি। সেখান থেকে পাঠানো হয় হাবিবগঞ্জ থানায়। এই থানা বলে, ঘটনাস্থল স্টেশন-লাগোয়া। হাবিবগঞ্জ জিআরপি-তে জানাতে হবে। সেখানে পুলিশের চরম দুর্ব্যবহারের মুখে পড়ে পরিবারটি। শুনতে হয় ফিল্মি গল্প বানানোর অভিযোগ। হতাশ হয়ে থানা থেকে ফেরার সময়ে গোলু ও ঘুন্টুকে দেখতে পান তরুণীটি। তাড়া করে তাদের ধরে জিআরপি-র হাতে তুলে দেন তাঁরা। পুলিশ অভিযোগ নিতে বাধ্য হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhopal Gang rape college girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE