Advertisement
E-Paper

মোদীর চ্যালেঞ্জ এ বার কূটনীতি

কূটনীতিকেরা বলেন, সরকার বদলালেও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ধারাবাহিকতা রাখার চেষ্টা করা হয়। আর কোনও দেশের ভোটে যদি সেই সরকারই ফেরে, তা হলে সোনায় সোহাগা!

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০৩:৩৫
শপথ নেওয়ার পরে পর-পর চিন, আমেরিকা, রাশিয়ার রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদী। ছবি রয়টার্স।

শপথ নেওয়ার পরে পর-পর চিন, আমেরিকা, রাশিয়ার রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদী। ছবি রয়টার্স।

দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেই বিশ্বের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কোন কোন বিদেশি অতিথি আসবেন, তা নির্দিষ্ট করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। চলছে আন্তর্জাতিক দৌত্যের ঠাসা কর্মসূচিতে দাগ মারাও। বিবদমান দেশগুলির সঙ্গে পৃথক ভাবে সম্পর্ক রাখা, বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি সামলানো, নিজের প্রথম ইনিংসে তৈরি ক্ষতের মেরামতি এবং নতুন করে পথ চলার মতো বহু চ্যালেঞ্জ মোদীর সামনে।

কাল চূড়ান্ত ফল ঘোষণার অনেক আগেই রাষ্ট্রনেতাদের অভিনন্দন এসেছে। কূটনীতিকেরা বলেন, সরকার বদলালেও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ধারাবাহিকতা রাখার চেষ্টা করা হয়। আর কোনও দেশের ভোটে যদি সেই সরকারই ফেরে, তা হলে সোনায় সোহাগা! কাল ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন, ইমানুয়েল মাকরঁ, আবে শিনজো, শেখ হাসিনাদের আগাম বার্তা থেকে এই স্বস্তির বার্তাই স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ মে-র আগে যেখানে শেষ হয়েছিল, জুনে সেই বিন্দু থেকেই লাইন শুরু করার স্বস্তি।

শপথ নেওয়ার পরে পর-পর চিন, আমেরিকা, রাশিয়ার রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বসবেন মোদী। কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক কারণে এই দেশগুলি আবার পরস্পরের প্রতি যুযুধান। জুনেই পিঠোপিঠি রয়েছে কিরঘিজস্তানে এসসিও শীর্ষ বৈঠক এবং জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলন। অগস্টে মোদী রওনা হবেন প্যারিসে জি-৭ বৈঠকে। ভারত ছাড়াও থাকবে অস্ট্রেলিয়া, চিলি, দক্ষিণ আফ্রিকা। ইউরোপে ভারতের অন্যতম স্ট্র্যাটেজিক মিত্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁও থাকবেন সেখানে।

ওসাকাতেই ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের কথা মোদীর। আগামি বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই এই বছরটি ট্রাম্পের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের বিশাল বাজার আমেরিকার জন্য লোভনীয় ঠিকই, কিন্তু বাণিজ্য নীতির প্রশ্নে মতপার্থক্য ছাড়াও ইরান এবং রাশিয়া থেকে তেল এবং অস্ত্র আমদানির প্রশ্নে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন দ্বৈরথ চলছে। এর মধ্যেই মোদী আমেরিকার সঙ্গে তাঁর নতুন ইনিংসের প্রথম বলটি খেলবেন সেখানে। সূত্রের খবর, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানকে এড়িয়ে ভারত-আমেরিকা বোঝাপড়া গড়তে ট্রাম্পকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা থাকবে মোদীর। জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে আমেরিকা এবং জাপানের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকও সারবেন মোদী।

চিন, আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধ যখন তুঙ্গে, তখন একই মাসে চিনা প্রেসিন্ডেন্ট শি চিনফিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক অনেকটা সরু তারের উপর দিয়ে হাঁটা বলে জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। সম্প্রতি মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় ঢোকাতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল আমেরিকা। চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত চিনও আপত্তি তুলে নেয়। এ বার দু’টি দেশই বিনিময়ে ভারতের কাছ থেকে নিজ নিজ অভীষ্ট সিদ্ধ করতে চাইবে। চিনের ওবর মহাপ্রকল্পে ভারতকে সামিল করানোর জন্য প্রবল চাপ যে বেজিং-এর তরফ থেকে আসতে চলেছে, এটা বিদেশ মন্ত্রকের অজানা নয়।

এর পরের মাসেই মোদী মুখোমুখি হবেন হোয়াইট হাউসের শ্যেন নজরে থাকা রুশ প্রেসিডেন্টের। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় পূর্ব ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ভ্লাদিভস্তকে যাবেন মোদী। সেখানে পুতিনের সঙ্গে বার্ষিক বৈঠক করবেন। ইজ়রায়েল এবং রাশিয়া অস্ত্র রফতানির প্রশ্নে ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ দুই রাষ্ট্র। কিন্তু রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে ওয়াশিংটন।

২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইজ়রায়েলের সঙ্গে অস্ত্র, নিরাপত্তা, জল সম্পদ, কৃষিপণ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা শুরু করেছিল মোদী সরকার। ফের তা বাড়ানোর চেষ্টা চলবে। অন্য দিকে পুরনো বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে বিগত মোদী জমানায় সম্পর্ক কিছুটা বেলাগাম হলেও ফের তাতে রাশ পরানো গিয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই হোক, বা চিনকে কিছুটা চাপে রাখা— মস্কো নয়াদিল্লির কাছে জরুরি অস্ত্র।

ভোটের মুখে দাঁড়ানো ট্রাম্পের কাছ থেকে জাতীয় স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এই সব কূটনৈতিক ছাড়পত্র আদায়ের চেষ্টাও তড়িঘড়ি করতে হবে মোদীকে।

Narendra Modi Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy