উত্তর গোয়ার বির্চ নৈশক্লাবের অন্যতম মালিক অজয় গুপ্তকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছে গোয়া পুলিশ। ‘মেরুদণ্ডে সমস্যার’ কারণে লাজপতনগরের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারী সূত্রের দাবি, গ্রেফতার হতে পারেন জেনেই হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হন অজয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
গোয়ার সেই নৈশক্লাবের চার মালিকের একজন অজয়। অগ্নিকাণ্ডের পর তাঁর বিরুদ্ধেও লুকআউট সার্কুলার (এলওসি) জারি হয়। দিল্লিতে তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালায় পুলিশের একটি দল। কিন্তু সে সময় অজয় বাড়ি ছিলেন না। এর পরেই গ্রেফতারি এড়াতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলেন তিনি। জানা গিয়েছে, মেরুদণ্ডের সমস্যার ভান করে দিল্লির লাজপতনগরের এক হাসপাতালে ভর্তিও হন। কিন্তু এত করেও শেষমেশ পুলিশের জালে ধরা পড়ে যান।
ধৃতের মোবাইলের টাওয়ারের গতিবিধি খতিয়ে দেখে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এলওসি জারি হওয়ার পর থেকেই বার বার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন অজয়। ফোনের ব্যবহারও কমিয়ে দেন। এর পর মঙ্গলবার লাজপতনগরের হাসপাতালে চলে যান অজয়। ডাক্তারদের জানান, তিনি মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয়ের পরিকল্পনা ছিল পরবর্তী তিন-চার দিন হাসপাতালেই থাকার। ভেবেছিলেন, ওই সময়ে পরবর্তী পদক্ষেপ পরিকল্পনা করবেন তিনি। কিন্তু দিল্লি পুলিশের অপরাধদমন শাখার সূত্রে গোয়া পুলিশ খবর পায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অজয়। তার পরই গোয়া পুলিশের একটি দল লাজপতনগরের ওই হাসপাতাল থেকে অজয়কে প্রথমে আটক করেন। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন:
যদিও অজয়ের দাবি, তিনি ওই ক্লাবের এক জন অংশীদার মাত্র। এই ঘটনায় তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না। এমনকি, ক্লাবে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল, তা-ও জানতেন না তিনি। গোয়ার ওই নৈশক্লাবের চার মালিকের মধ্যে এক জন ছিলেন অজয়। মূল মালিক ছিলেন সৌরভ ও গৌরব লুথরা (লুথরা ভাইয়েরা)। চতুর্থ মালিকের নাম সুরেন্দ্রকুমার খোসলা। তাঁর বিরুদ্ধেও এলওসি জারি করেছে গোয়া পুলিশ। গোয়াকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন নৈশক্লাবের চিফ জেনারেল ম্যানেজার রাজীব মোদক, জেনারেল ম্যানেজার বিবেক সিংহ, বার ম্যানেজার রাজীব সিঙ্ঘানিয়া, গেট ম্যানেজার রিয়াংশু ঠাকুর এবং কর্মচারী ভারত কোহলি। তবে ক্লাবের প্রধান মালিক সৌরভ ও গৌরব এখনও অধরাই। মনে করা হচ্ছে, তাইল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, গত শনিবার গভীর রাতে উত্তর গোয়ার আরপোরার বির্চ নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার পর থেকে পলাতক নৈশক্লাবের দুই মালিক সৌরভ এবং গৌরব লুথরা। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁরা তাইল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছেন। লুথরা ভাইদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ব্লু কর্নার নোটিস জারি করেছে।