দেহ বলতে বিশেষ কিছু অবশিষ্ট নেই। পড়ে আছে কয়েকটা দলাপাকানো শরীর, পুড়ে যাওয়া হাত-পায়ের টুকরো। দেখে চেনার কোনও উপায় নেই, কোনটি কার দেহ। অগত্যা ডিএনএ পরীক্ষাই সম্বল! অহমদাবাদে বিমান বিপর্যয়ের পর সাত দিন কেটে গিয়েছে। সাত সাতটা দিন ধরে প্রিয়জনদের দেহাংশ হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন স্বজনেরা। চলছে দেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার গুজরাতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হৃষীকেশ পটেল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষায় অহমদাবাদে নিহতদের মধ্যে ২১০ জনের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এঁদের সকলের পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৮৭টি দেহ সৎকারের জন্য পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়াও হয়ে গিয়েছে। বাকি দেহগুলিও শীঘ্রই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এখনও বাকি ৬৪টি দেহ শনাক্তকরণের কাজ চলছে। এখনও অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতাল এবং অন্যত্র ঠায় বসে রয়েছেন নিহত ও নিখোঁজদের পরিজনেরা।
আরও পড়ুন:
গত ১২ জুন অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে উড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার সেই অভিশপ্ত বিমান ‘এআই১৭১’। কিন্তু রানওয়ে ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভেঙে পড়ে বিমানটি। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ। বিমানে মোট ২৪২ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র এক জন যাত্রী বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন। বাকি সকলের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসাবে এখনও পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২৭৪। দুর্ঘটনার পর এআই ১৭১-এ থাকা যাত্রীদের বেশির ভাগের দেহ শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। সেই আবহে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। যাত্রীদের পরিজনদের কাছ থেকে ডিএনএ-র নমুনা নিয়ে পাঠানো হয় গুজরাতের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল) এবং দেশের ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এনএফএসইউ)-তে। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীও ছিলেন। গত রবিবার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁর দেহ শনাক্ত করা হয়। দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। সোমবার রাজকোটে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় রূপাণীর।