পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার সঙ্গে হামাসের হামলার মিল পাচ্ছে ইজ়রায়েল। জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় গত মঙ্গলবার জঙ্গিহানায় মৃত্যু হয়েছে ২৬ পর্যটকের। তার মধ্যে এক জন বিদেশিও (নেপালি) আছেন। ভারতে ইজ়রায়েলের রাষ্ট্রদূত রুভেন আজ়ারের দাবি, গত বছরে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যে ভাবে তাঁদের দেশে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল, তার সঙ্গে মিল আছে জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গিহানার।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে আজ়ার বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার সঙ্গে অনেক মিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইজ়রায়েলে হানার। গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে ছুটির আনন্দ করছিলেন পর্যটকেরা। আর ২০২৩ সালে ইজ়রায়েলে গানের জলসায় আনন্দ করছিলেন দর্শকেরা। তখন হামলা করেছিল হামাস।’’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল হামাস। সেই হামলায় ১২১৮ জনের মৃত্যু হয়। বহু ইজ়রায়েলিকে অপহরণ করে হামাস। অপহৃতদের অনেকে এখনও হামাসের ডেরায় বন্দি। হামাস দাবি করেছিল, ৫১,৪৯৫ জন প্যালেস্টাইনির প্রাণহানির পাশাপাশি পণবন্দি ইজ়রায়েলিদের বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে ইজ়রায়েলের হামলায়। ইজ়রায়েলে সেই যুদ্ধ এখনও জারি। ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূতের দাবি, বিশ্বের প্রায় সমস্ত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন একযোগে বিভিন্ন ‘অপারেশন’ চালাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদীরা অনেক জায়গায় মিলিত ভাবে কাজ করছে। তারা একে অপরকে অনুকরণ করে মানুষ মারছে। তবে আমি নিশ্চিত, এদের হার হবেই।’’
আজ়ারের দাবির মূলে রয়েছে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট। যেখানে দাবি করা হয়, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার মাস দুয়েক আগে হামাসের কয়েক জন নেতা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ছিলেন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, হামাসের মুখপাত্র খালিদ আল-কাদুমি, নাজ়ি জ়াহির-সহ হামাসের নেতা মুফতি আজ়মেরা গত ৫ ফেব্রুয়ারি রওয়ালকোটে একটি পদযাত্রায় ছিলেন। তাতে প্রায় ১০০ জঙ্গিনেতা ছিল বলে দাবি। সেখানে অনেকে ঘৃণাভাষণ দেয়। বস্তুত, শালমুড়ি দিয়ে এই প্রথম বার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামাস নেতাদের উপস্থিতির তথ্য পান গোয়েন্দারা। ওই সম্পর্কিত বেশ কিছু ভিডিয়ো ফুটেজ সংগ্রহ করে তারা। আবার পাকিস্তানে হামাসের নেতাদের উপস্থিতি নতুন কিছু নয়। বিশেষত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইজ়রায়েলে হানার পর থেকে বার বার পাকিস্তানে যাতায়াত করেছে কয়েক জন নেতা। এমনকি, হামাসের একটি দল জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠীর ‘সদর দফতর’-এ গিয়েছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে হামাসের মুখপাত্র আল-কাদুমিকে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আমন্ত্রণ জানানো হয় ভাষণ দেওয়ার জন্য। এই সব মিলিয়ে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় হামাসের যোগসূত্র দেখছেন গোয়েন্দাদের একাংশ।
এর আগে হামাসকে জঙ্গিগোষ্ঠী হিসাবে শ্রেণিভুক্ত করার জন্য ভারতের কাছে আবেদন করেছিল ইজ়রায়েল। ভারতের তরফে ই়জরায়েলে হামাসের হানার নিন্দা করা হলেও এখনও পর্যন্ত ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইউএপিএ বা বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে তালিকাভুক্ত করা হয়নি।