চণ্ডীগড়ের বাড়ির বেসমেন্টে সার্ভিস রিভলভার দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হরিয়ানার আইপিএস অফিসার ওয়াই পূরণ কুমার। আঙুল তুলেছেন সহকর্মী আমলা এবং আইপিএসদের দিকে। চরম পদক্ষেপ করার আগের রাতে, ৬ অক্টোবর স্ত্রীকে নিজের ইচ্ছাপত্র (উইল)-এর খসড়ার ছবি তুলে মেসেজ করে পাঠান কুমার। সেই সঙ্গে দীর্ঘ সুইসাইড নোটের ছবিও মেসেজ করে পাঠান। তাঁর আইএএস স্ত্রী অমনিত পি কুমার তখন জাপানে ছিলেন সরকারি কাজে। চিঠি দেখে বার বার ফোন করতে থাকেন স্বামীকে। কিন্তু লাভ হয়নি। সেই ফোন ধনেননি কুমার। বিদেশে বসে ছোট মেয়ের দ্বারস্থ হন অমনিত। ছোট মেয়ে মায়ের ফোন পেয়ে দ্রুত বাড়িতে ছুটে গেলেও লাভ হয়নি। গিয়ে দেখেন, সোফার উপরে পড়ে রয়েছে বাবার দেহ।
৭ অক্টোবর দুপুরে নিজের বাড়ির বেসমেন্টের একটি ঘরে সার্ভিস রিভলভার দিয়ে আত্মহত্যা করেন কুমার। ওই ঘরটি ছিল শব্দনিরোধক। সে সময় বাড়িতে কাজ করছিলেন তাঁদের পরিচারক। তিনি কিছুই জানতে পারেননি। চরম পদক্ষেপ করার আগের দিন জাপানে থাকা স্ত্রীকে ন’পাতার একটি সুইসাইড নোট পাঠান কুমার। সেখানে ১২ জন আইপিএস এবং আইএসের দিকে আঙুল তোলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত। কুমারের অভিযোগ, ওই ১২ জন তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছেন। জাতপাত নিয়ে হেনস্থা করে মানসিক নির্যাতন করেছেন। তাঁকে আর্থিক ভাতা, সরকারি আবাসন পেতে দেননি। এমনকি, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর সরকারি গাড়িও তাঁরা নিয়ে নেন।
ঘটনাস্থল থেকে কুমারের লেখা সুইসাইড নোট এবং ইচ্ছাপত্রের খসড়া উদ্ধার করা হয়েছে। ইচ্ছাপত্রে নিজের স্ত্রীকে সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে গিয়েছেন তিনি। এই নোট এবং ইচ্ছাপত্রের খসড়ার মেসেজ পেয়ে অন্তত ১৫ বার স্বামীকে জাপান থেকে ফোন করেন আইএএস স্ত্রী। কুমার ফোন ধরেননি। তাঁর পরিচারক প্রেম সিংহ জানান, ৭ অক্টোবর সকাল ১০টা নাগাদ তিনি বেসমেন্টে চলে যান। বলে যান, তাঁকে যেন কেউ বিরক্ত না করেন। সে সময় অমনিত ক্রমাগত তাঁকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু সেই ফোন ধরেননি কুমার। দুপুরে তাঁদের কন্যা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। হরিয়ানার ডিজিপি শত্রজিৎ সিংহ কাপুর এবং রোহতকের পুলিশ সুপার নরেন্দ্র বিজারনিয়ার বিরুদ্ধে কুমারকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্ত্রী। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার দাবিও তুলেছেন।