পাক হামলা রুখতে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির চত্বরে ক্ষেপণাস্ত্ররোধী বন্দুক রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভারপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুমের ইভান ডি’কুনহা। কিন্তু তাঁর সেই দাবিকে ‘প্রচারমূলক’ বলে খারিজ করে দিলেন স্বর্ণমন্দিরের প্রধান গ্রন্থী জ্ঞানী রঘবীর সিংহ। ওই সেনাকর্তা দাবি করেছিলেন, স্বর্ণমন্দির চত্বরে ক্ষেপণাস্ত্ররোধী বন্দুক রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন প্রধান গ্রন্থী। মঙ্গলবার রঘবীর জানান, এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে সেনার তরফে কেউ যোগাযোগই করেননি।
সোমবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি’কুনহা বলেন, “স্বর্ণমন্দিরের প্রধান গ্রন্থী আমাদের বন্দুক রাখার অনুমতি দেন। সম্ভবত বহু বছর পরে প্রথম বার স্বর্ণমন্দিরের সব আলো বন্ধ রাখা হয়। তাই আমরা পাকিস্তানের ড্রোনগুলিকে চিহ্নিত করতে পারি।” কিন্তু সেনাকর্তার এই বক্তব্যকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন স্বর্ণমন্দিরের প্রধান গ্রন্থী।
রঘবীর সিংহ কেবল স্বর্ণমন্দিরের প্রধান গ্রন্থীই নন, অকাল তখ্তের প্রাক্তন জাঠেদারও বটে। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে সেনার তরফে কেউ যোগাযোগ করেননি। (স্বর্ণমন্দিরে) সমরাস্ত্র রাখা নিয়েও কোনও কথা হয়নি।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমি ২২ দিনের ছুটিতে আমেরিকা গিয়েছিলাম। ২৪ এপ্রিল যাই, আর ১৪ মে (ভারত-পাক) সংঘাত থামার পর ফিরি। সেনার দাবি শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি) তদন্ত করে দেখবে। এসজিপিসি-র কোনও সদস্য বিষয়টির সঙ্গে জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন:
সেনাকর্তা দাবি করেছিলেন, সেনা সম্ভাব্য পাক হামলার কথা জানানোর পর স্বর্ণমন্দিরের আলো নিবিয়ে দেওয়া হয়। এই দাবিও খারিজ করে দিয়েছে শিখদের অন্যতম শীর্ষ ধর্মীয় সংগঠন এসজিপিসি। এসজিপিসি-র তরফে জ্ঞানী অমরজিৎ সিংহ জানান, জেলা প্রশাসনের নির্দেশিকা মেনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাইরের আলো বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু যে অংশে ধর্মাচরণ হয়, সেখানে আলো জ্বলছিল বলে জানান তিনি। তিনি এ-ও জানান যে, ধর্মস্থানে পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, রঘবীরের অনুপস্থিতিতে স্বর্ণমন্দিরের প্রধান গ্রন্থীর ভূমিকা পালন করছিলেন অমরজিৎই।
প্রসঙ্গত, ভারত-পাক অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত থেকে স্বর্ণমন্দিরের দূরত্ব মাত্র ৩১ কিলোমিটার। সেনার তরফে আগেই জানানো হয়, ভারত-পাক সামরিক সংঘাতের আবহে গত ৭-৮ মে রাতে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তানি সেনা। সেনাবাহিনীর ১৫ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল কার্তিক সি শেষাদ্রি জানান, হামলা হতে পারে আশঙ্কায় আগে থেকেই ‘নিরাপত্তার ছাতায়’ ঢেকে ফেলা হয়েছিল স্বর্ণমন্দির। শনিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি’কুনহা স্বর্ণমন্দিরে ক্ষেপণাস্ত্ররোধী অস্ত্র মোতায়েনের কথা জানান। কিন্তু সেই বক্তব্য নস্যাৎ করে দিলেন স্বর্ণমন্দির কর্তৃপক্ষই।