Advertisement
E-Paper

‘গুলির শব্দ আসছে, এক ঘণ্টা চুপ করে বসেছিলাম!’ জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচলেন কী ভাবে, জানালেন প্রসন্ন

আনন্দের ছবি মুহূর্তে পাল্টে যায় বিভীষিকায়, জানান প্রসন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘সকলে দৌড়োদৌড়ি শুরু করেন। আমরা একটু গিয়ে দেখতে পাই উপত্যকার উপর পড়ে আছে দুই মৃতদেহ!’’

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৫৫
How Mysuru man survived pahalgam incident

পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী মায়সুরুর দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত।

মনোরম নীল আকাশ। তাতে পেঁজা পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভাসছে। চারপাশে সারি সারি গাছ। ঢেউ খেলানো উপত্যকা। যেন এক স্বর্গরাজ্য! সেখানে কেউ ঘোড়ায় চেপে ঘুরছেন, কেউ আবার হেঁটে। বাচ্চাদের কলরবে মুখরিত বৈসরন উপত্যকা মুহূর্তে পাল্টে যায় রক্তাক্ত ছবিতে! সমাজমাধ্যমে ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ‘ভয়াবহ’ অভিজ্ঞতার বর্ণনা এরকম ভাবেই শুরু করেছেন মায়সুরুর বাসিন্দা প্রসন্নকুমার ভট্ট। এখনও তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না কী ভাবে বেঁচে গেলেন!

প্রসন্ন তাঁর স্ত্রী এবং ভাইয়ের সঙ্গে মঙ্গলবারই পহেলগাঁওয়ে পৌঁছোন। তাঁর ভাই ভারতীয় সেনার উচ্চপদে কর্মরত। আর প্রসন্ন পেশায় সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। পরিবার নিয়ে ‘ভূস্বর্গে’ ঘুরতে এমন ‘নারকীয়’ ঘটনার সাক্ষী হবেন তা ভাবতেই পারেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সকলে মিলে বৈসরন উপত্যকার মনোরম পরিবেশ উপভোগ করছিলমা। চারপাশে অনেকে ছিলেন। সকলেই খুশি। দুপুর ২টো ২৫ মিনিট নাগাদ আচমকাই আমরা পর পর দু’টি গুলির শব্দ শুনতে পাই। তার পর এক মিনিট সব চুপচাপ। প্রথমে কেউ বুঝতেই পারিনি কী ঘটেছে! কোথা থেকে এল গুলির শব্দ!’’

আনন্দের ছবি মুহূর্তে পাল্টে যায় বিভীষিকায়, জানান প্রসন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘সকলে দৌড়োদৌড়ি শুরু করেন। আমরা একটু গিয়ে দেখতে পাই ঘাসের উপর পড়ে আছে দু’টি মৃতদেহ! আমার ভাই সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারে, কী ঘটেছে। জঙ্গি হামলার আঁচ পেয়েই সকলকে ঘটনাস্থল ছাড়তে বলে। দ্রুত ৩০-৪০ জন পর্যটককে বিপরীত দিকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে বলে, মাথা নিচু করে দৌড়তে। আমরাও সেই ভাবে দৌড়ে উপত্যকা থেকে প্রস্থানের দরজার কাছে পৌঁছোই। কিন্তু দেখতে পাই সেই দরজার সামনে জঙ্গিরা দাঁড়িয়ে। মুহূর্তে উল্টো দিকে দৌঁড়োতে শুরু করি। আমাদের ভাগ্য ভাল ছিল, উপত্যকার চারপাশে দেওয়া বেড়ার এক জায়গা ফাঁকা ছিল। তার মধ্যে দিয়েই আমরা পালাই।’’

বৈসরন ছেড়ে গেলেও বেশি দূর পালাতে পারেননি বলে জানান প্রসন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘পিছন থেকে ক্রমাগত গুলি শব্দ ভেসে আসছিল। আমরা ভয়ে কাছেপিঠে এক পাহাড়ের আড়ালে আশ্রয় নিয়েছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা ওখানেই নিঃশব্দে বসেছিলাম। বিকেল ৩টে ৪০ মিনিট নাগাদ হেলিকপ্টারের শব্দ, নিরাপত্তাবাহিনী চলে আসার পর মনে একটু সাহস আসে। ওই গর্ত থেকে বাইরে বেরিয়ে আসি। আমাদের পরে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’’

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনায় প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরলেও এখনও আতঙ্কিত মায়সুরুর প্রসন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘গুলির শব্দ, মৃতদেহ, উপত্যকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রক্ত— কখনও ভুলতে পারব না। স্মৃতিতে দগদগে হয়ে থাকবে এই ক্ষত। আমি প্রার্থনা করি যেন আর কারও সঙ্গে এমন অভিজ্ঞতা না হয়!’’

Pahalgam Terror Attack Eye Witness
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy