মেঘালয়ে ঘুরতে যাওয়া, সেখানে রাজা রঘুবংশীকে খুন, তার পর দেহ খাদে ফেলা এবং শেষে মেঘালয় ছেড়ে বেরিয়ে আসা— সবই ঘটেছে পরিকল্পনামাফিক! রাজার স্ত্রী সোনম এবং তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতারির পর এমনই জানাল পুলিশ। গত ২৩ মে ইনদওরের যুবক রাজাকে খুন করা হয় মেঘালয়ে। তবে সেই দেহ উদ্ধার হয় ১১ দিন পর! স্ত্রী সোনমকে নিয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন তিনি। সোমবার সোনমের গ্রেফতারির পর থেকে একের পর এক রহস্যের উন্মোচন হচ্ছে।
রাজাকে খুনের পর অভিযুক্তেরা কোথায় ছিলেন? পূর্ব খাসি পাহাড়ের পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম জানান, ২৩ মে সোনম এবং রাজা ট্রেকিং করতে বেরিয়েছিলেন। উঠেছিলেন মাওলাখিয়াতের একটি চূড়ায়। নির্জন স্থানে পৌঁছোতেই রাজাকে খুন করা হয়। আর গোটা ঘটনাটাই হয়েছে সোনমের নির্দেশে, তাঁর চোখের সামনেই। তার পরে খাদে ফেলে দেওয়া হয় রাজার দেহ! তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ধৃত ‘ভাড়াটে খুনিরা’ তাঁদের কাছে দাবি করেছেন, সোনম চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘‘ওকে মেরে ফেল!’’ সেই নির্দেশ পেতেই রাজার উপর হামলা চালানো হয়।
বিবেক জানিয়েছেন, খুনের ঘটনার পরই মাওকাদোক থেকে একটি ট্যাক্সিতে শিলং আসেন সোনম। তার পরে সেখান থেকে ট্যুরিস্ট ট্যাক্সিতে চড়ে গুয়াহাটি পৌঁছোন তিনি। তার পরে ট্রেনে চেপে উত্তরপ্রদেশ। আর ‘ভাড়াটে খুনি’দেরও যাত্রাপথ একই ছিল। তবে সোনমের সঙ্গে তাঁরা যাননি। অন্য দিকে, সোনমের ‘প্রেমিক’ রাজ আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন ইনদওর। যাতে এই ঘটনায় কোনও সন্দেহ না জাগে। এমনকি, রাজার শেষকৃত্যেও হাজির ছিলেন রাজ।
কী ভাবে রাজাকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তারও আভাস পেয়েছে পুলিশ। রাজই খুনের জন্য তাঁর তিন বন্ধুকে ‘ভাড়া’ করেন। ২০ লক্ষ টাকায় চুক্তি হয়। বিবেক জানান, খুনের দিন সোনম প্রথমে রাজের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তিনিই তাঁর তিন বন্ধু সঙ্গে কথা বলেন। তবে এখনও পর্যন্ত সোনমের ফোন পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীদের অনুমান, সোনমের ফোন পাওয়া পাওয়া গেলেই এই রহস্যের অনেক দিক উন্মোচিত হবে!
আরও পড়ুন:
মেঘালয়ের কোথায় রাজাকে খুন করা যায়, তা কী ভাবে ঠিক হয়েছিল সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা। সোনম আগে কখনও মেঘালয় গিয়েছিলেন কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। পূর্ব খাসির পুলিশ সুপারের মতে, ‘‘গুগ্ল থেকেই হয়তো নির্জন জায়গার খোঁজ পেয়েছিলেন সোনমেরা!’’